দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী থাকার পর শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন জনপ্রিয় বর্ষীয়ান অভিনেতা কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়। রবিবার রাতে হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। উত্তমকুমারের সহ অভিনেতা হিসেবে যিনি বাংলা সিনেমার পর্দায় এক অনন্য পরিচিতি তৈরি করেছিলেন, তাঁর বিদায়ে পুরো টলিউডে নেমে এসেছে গভীর শোক। শিল্পী মহলে শুরু হয়েছে স্মৃতিচারণ এবং শ্রদ্ধার তরঙ্গ।
আর্টিস্ট ফোরামের তরফে সোহন বন্দ্যোপাধ্যায় ও দিগন্ত বাগচী জানিয়েছেন যে, কল্যাণবাবু দীর্ঘদিন ধরে ম্যালেরিয়া ও টাইফয়েডসহ নানা জটিল অসুস্থতায় ভুগছিলেন। অসুস্থতার কারণে তিনি অনেকটাই শয্যাশায়ী হয়ে পড়েছিলেন এবং গত কয়েক বছরে আর কাজ করতে পারেননি। তাঁর শারীরিক অবস্থা ক্রমাগত অবনতি হওয়ায় বেশ কিছু দিন ধরে তিনি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।
মৃ’ত্যুর পর রাতেই তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কেওড়াতলা মহাশ্মশানে। সেখানেই সম্পন্ন হবে তাঁর শেষকৃত্য, জানিয়েছে পরিবার। শেষ সময়ে তাঁর সঙ্গে থাকার জন্য আর্টিস্ট ফোরামের সদস্যরাও চেষ্টা করেছিলেন। এই কঠিন মুহূর্তে পরিবার ও সহকর্মীদের মাঝে শোকের আবহ আরও ঘনীভূত হয়েছে।
পুণে ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে অভিনয় শেখা কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম ছবি ছিল তপন সিংহের আপনজন। সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁর চমকপ্রদ অভিনয় যাত্রা। সাগিনা মাহাতো, ধন্যি মেয়ে সহ প্রায় চার শতাধিক ছবিতে অভিনয় করে তিনি হয়ে ওঠেন পরিচালকদের প্রিয় মুখ। তপন সিংহ ও অরবিন্দ মুখোপাধ্যায়ের অন্যতম পছন্দের অভিনেতা হিসেবে তিনি বিশেষ পরিচিত ছিলেন।
আরও পড়ুনঃ ‘স্লট বদলের পর যখন প্রোমোটা দেখলাম, তার মানে…’ সময় বদলালেও রক্ষা হল না, জগদ্ধাত্রী এবার সত্যিই ইতি টানছে? ধারাবাহিক শেষের জল্পনায় কী বললেন অঙ্কিতা মল্লিক?
বড়পর্দার পাশাপাশি ছোটপর্দা ও ওয়েব সিরিজেও তিনি রাখেন সমান দক্ষতার ছাপ। সুজয় ঘোষের হিন্দি ছবি কাহানিতে তাঁর অভিনয় বিশেষ প্রশংসিত হয়েছিল। তানসেনের তানপুরা সিরিজেও তিনি নজর কাড়েন দর্শকের। মৃ’ত্যুর সময় তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় থেকে রঞ্জিত মল্লিক পর্যন্ত সমসাময়িক প্রায় সকল মহাতারকার সঙ্গেই তিনি কাজ করেছেন এবং রেখে গিয়েছেন বহু স্মরণীয় মুহূর্ত। টলিউড আজ সত্যিই হারাল এক উজ্জ্বল অভিনেতাকে।
