টলিউডে বহু বছরের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অভিনেত্রী ‘লাবণী সরকার’ (Laboni Sarkar)। তাঁর অভিনয় থেকে অঙ্গভঙ্গি আর চরিত্রের গভীরতায়, বারবার মুগ্ধ করেছেন দর্শকদের। তাকে মূলত মা, শাশুড়ি, উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং মহৎ নারীর চরিত্রে দেখতে অভ্যস্ত সবাই। কিন্তু তার বাস্তব জীবন অনেকটাই অন্যরকম। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি সবসময় নিজের তৈরি পথে হাঁটতে পছন্দ করেন। বিশেষ করে, তার জীবনযাপনে স্বাধীনতার গুরুত্বকে তিনি সবার আগে রেখেছেন। সন্তান না নেওয়ার তাঁর সিদ্ধান্তও ছিল সমাজের প্রচলিত ধারণার বাইরে, সম্পূর্ণ নিজস্ব ইচ্ছা।
অন্যদিকে, অভিনেতা কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Kaushik Banerjee) সঙ্গে তার সম্পর্কের শুরুটাও ছিল বিতর্কিত। কৌশিকের প্রথম বিয়েতে নানা সমস্যার পর যখন তিনি ভেঙে পড়েন, তখন লাবণীর সঙ্গে পরিচয় হয়। একসময় দু’জনে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলেও, লাবণী কখনও সন্তান নেওয়ার দিকে মনোযোগ দেননি। কৌশিকের প্রথম পক্ষের পুত্র সন্তানের মা হয়ে উঠলেও, নিজের জীবনযাপনে এবং চিন্তাধারায় কোনও পরিবর্তন আনেননি। প্রসঙ্গত, ছোটপর্দা এবং বড় পর্দা মিলিয়ে এই জুটির জনপ্রিয়তা আজও অটুট।
তবে, সাফল্যের পথে যাদের থেকে জীবনের সবচেয়ে স্মরনীয় জ্ঞান পেয়েছেন, তাদের কৃতজ্ঞতাও জানাতে কোনদিনও ভোলেন না তাঁরা। এদিন এমনই একটি সাক্ষাৎকারের ছোট্ট অংশ প্রকাশ্যে এসেছে, সেখানে অভিনেতা কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভাগ করে নিতে দেখা গেল কিংবদন্তি শিল্পী মিঠুন চক্রবর্তীর সঙ্গে তাদের অবিস্মরণীয় একটি মুহূর্তের কথা। অভিনেতা বলেন, “একদিন আমরা খেতে বসেছি সবাই একসঙ্গে। সেখানে যীশু সেনগুপ্ত, আমি, লাবনী, রচনা ব্যানার্জি, মিঠুন চক্রবর্তীও ছিলেন।
লাবনী চিকেনের একটা টুকরো, সম্ভবত মাথার কোনও অংশ ঘেন্না বসত থালার ধারে রেখে দিয়েছিল, খায়নি। খাওয়া শেষ করে যখন থালাটা তুলছে, মিঠুন দা জিজ্ঞেস করলেন যে ওটা কেন খায়নি। লাবনী বলেছে যে, ‘ওটা আমার ভক্তি হয় না তাই খাইনি।’ সেদিন ভাবা যায় না, মিঠুন চক্রবর্তীর মতো একটা অত বড় মানুষ, লাবনীর এঠো থালা থেকে তুলে মাংসটা খেয়ে নিলেন! তার সঙ্গে বললেন, ‘একদিন খেতে পেতাম না রে, আর তোরা এইভাবে ফেলে দিচ্ছিস! কতদিন না খেয়ে কাটিয়েছি, থাকার জায়গা ছিল না। তোদের অনেক টাকা হয়ে গেছে বলে এইসব করছিস!’
আরও পড়ুনঃ ছোটপর্দায় নতুন দিদি! দিদি নং ১-এর সঞ্চালিকার পদ থেকে বাদ পড়লেন রচনা ব্যানার্জি? নতুন সঞ্চালিকা রুক্মিণী মৈত্র?
অবাক হয়ে ওনার দিকে দেখলাম আমরা সবাই।” তারই সঙ্গে অভিনেতা কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বললেন, “স্টারডম বলেন আপনারা! কী বোঝেন? এই মিঠুন চক্রবর্তী যখন কলকাতায় এসেছিলেন, প্রভাত রায়ের একটা ছবিতে অভিনয় করছিলেন ওটা হয়নি বলে অবরোধ চলছিল। গেট ভেঙে গিয়েছিল স্টুডিও সেদিন মানুষের চাপে। এরপর একদিন বন্যা ত্রাণ এর জন্য চাঁদা তুলতে বেরিয়েছিলেন, সারা রাস্তা অচল হয়ে গিয়েছিল কলকাতার! আর সেই মানুষটা কি না একটা মাংসের হাড় পর্যন্ত খেলছেন না! প্রতিনিয়ত উনার কাছ থেকে আমরা শিখেছি, আজও শিখছি।”
