টলিউডের অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা কোয়েল মল্লিক ( Koel Mallick) অভিনয়জীবন হোক বা ব্যক্তিগত জীবন, তাঁর প্রতি দর্শকদের কৌতূহল সবসময়ই তুঙ্গে। বিগত কয়েক বছরে বড় পর্দায় তাঁর উপস্থিতি কমলেও, কোয়েল যে এখনও সমানভাবে প্রাসঙ্গিক তা বলার অপেক্ষা রাখে না। পর্দার বাইরে তাঁর ব্যক্তিত্ব, ব্যবহার ও পারিবারিক জীবন নিয়েও দর্শকদের আগ্রহের শেষ নেই। আর সেই কৌতূহল আরও বাড়িয়েছে তাঁর সাম্প্রতিক জীবনপর্ব—দ্বিতীয়বারের জন্য মাতৃত্ব!
মা হওয়া প্রতিটি মহিলার জীবনেই বিশেষ অধ্যায়। কিন্তু এক সন্তান থেকে দুই সন্তান—এই জার্নিটা আরও বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে ওঠে। নতুন সদস্য আসার পর বদলে যায় জীবনের রুটিন, অভ্যাস, দৃষ্টিভঙ্গি সবকিছুই। কারও জন্য এটা কঠিন হয়ে পড়ে, কেউ আবার মাতৃত্বের এই পর্বকে দারুণ উপভোগ করেন। আর কোয়েল? তিনি কী বলছেন তাঁর অভিজ্ঞতা নিয়ে? দুই সন্তানকে সামলাতে গিয়ে তিনি কতটা হিমশিম খাচ্ছেন? নাকি তিনি এই অধ্যায়ে প্রবল আনন্দ খুঁজে পাচ্ছেন?

সম্প্রতি এক টলিউড ইভেন্টে হাজির ছিলেন Koel Mallick। সেখানেই তিনি একটি সাক্ষাৎকারে জানান, নতুন জীবনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে কীভাবে প্রতিদিন শিখছেন নতুন নতুন জিনিস। অভিনেত্রীর কথায়, “আমি বুঝতে পারছি না, আগের দিনের মানুষ কীভাবে এতজন ভাইবোনকে সামলাতেন! আমি তো মাত্র দুজনকে নিয়েই হিমশিম খাচ্ছি। আমার ঠাকুমাকে কোটি কোটি প্রণাম। আমি বাবাকে (Ranjit Mallick) জিজ্ঞেস করি, কীভাবে সামলাতেন? যাঁদের বাড়িতে অনেক সদস্য, তাঁরা কীভাবে সামলান কে জানে!”
তবে কোয়েল এটাও বলেন যে, যতই চ্যালেঞ্জিং হোক না কেন, এই মুহূর্তগুলি তাঁর কাছে অমূল্য। তিনি জানান, মাতৃত্ব তাঁকে অনেক নতুন জিনিস শিখিয়েছে। যেমন, সন্তানদের জন্য তাঁকে নতুন নতুন ছড়া শেখার দরকার পড়ছে। ছোটবেলায় যেসব ছড়া তিনি নিজে শুনতেন, এখন তার সঙ্গে যোগ হচ্ছে নতুন ছড়াগুলি। “আমরা ছোটবেলায় ‘হাট্টিমাটিম টিম’, ‘ইকির মিকির’ শিখেছিলাম। আর এখন বাচ্চাদের শেখানোর জন্য ‘বেবি শার্ক’ মুখস্থ করতে হচ্ছে!”—মজা করে বলেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ “আজও কিছু গ্রামে মেয়েদের পরিবারের সব পুরুষদের সঙ্গে সহবাসে বাধ্য করা হয়…” সমাজে মেয়েদের অবস্থান নিয়ে বিস্ফোরক মিমি!
মা হওয়ার পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল ভাই-বোনের সম্পর্ক। বড় সন্তান কীভাবে ছোটকে গ্রহণ করছে, সেটাও বড় চ্যালেঞ্জ। এই প্রসঙ্গে কোয়েল জানান, বড় ছেলে কবীর এখনও পর্যন্ত বোনকে পুতুল ভাবে! “ও ওর বোনকে টিপতে যায়। আমি বলি, না! কিন্তু একদম আটকাই না, কারণ ওদের বন্ডিং হওয়াটা খুব জরুরি। কবীর অনেকদিন ধরেই আমাকে বলত, ‘মাম্মা, মাম্মা কবে?’ আর ও তো নিশ্চিত ছিল যে, বোনই হবে। আমি সবসময় বলতাম, ‘ভগবান যাকেই দেবেন, যেন সুস্থ দেন।’ কিন্তু যখন সত্যিই ওর বোন এল, ও খুব খুশি হয়েছিল। এখন ওর দিন কাটছে দারুণ মজায়!”
দুই সন্তানের মা হওয়ার পর জীবনে এসেছে বড় পরিবর্তন। তবে কোয়েল এই পরিবর্তনকে দারুণ উপভোগ করছেন। তিনি জানাচ্ছেন, প্রতিদিন নতুন কিছু শেখার আনন্দই তাঁকে মাতৃত্বের চ্যালেঞ্জ সামলাতে সাহায্য করছে। পর্দায় তাঁকে কম দেখা গেলেও, বাস্তব জীবনে তাঁর এই যাত্রা অনুপ্রেরণার। মাতৃত্বের এই নতুন অধ্যায়কে তিনি কীভাবে সামলাচ্ছেন, তা নিঃসন্দেহে অনেক মায়ের কাছেই পরিচিত এবং অনুপ্রেরণার।