কলকাতা যখন দুর্গাপুজোর চেতনায় সাজতে প্রস্তুত, তখন উৎসবের বাড়তি ভিড় এবং নিরাপত্তা নিয়ে অনেকের মনে স্বাভাবিক ভাবেই দুশ্চিন্তা থাকে। এমন পরিবেশেই দুর্গোৎসবে নতুন মাত্রা যোগ করেছে দেশের শীর্ষ ব্যাটারি ও টর্চ ব্র্যান্ড এভাররেডি ইন্ডাস্ট্রিজ ইন্ডিয়া লিমিটেড। তারা চালু করেছে এক অভিনব উদ্যোগ—‘সুরক্ষা দ্বার’, যা কেবলমাত্র নারীদের জন্য তৈরি বিশেষ প্রবেশপথ। এ উদ্যোগ কেবল দুর্গাপুজোর ভিড় সামলানোই নয়, বরং মহিলাদের নিরাপদ ভাবে উৎসব উপভোগ করার এক নতুন দিশা।
শহরের কয়েকটি নামী প্যান্ডেলে এ বছর দেখা গেছে এই বিশেষ প্রবেশদ্বার। সাধারণত বড় প্যান্ডেলগুলোতে থাকে দুটি গেট—একটি সাধারণ জনতার জন্য, আরেকটি ভিআইপি দের জন্য। সেখানে এবার শিবমন্দির, বাবুবাগান ও বেহালা ক্লাবের মতো জনপ্রিয় পূজা আয়োজনে যুক্ত হয়েছিল এক অনন্য সংযোজন—শুধুমাত্র মহিলাদের জন্য ‘সুরক্ষা দ্বার’। এটি কেবল উৎসবকে আরও সুশৃঙ্খল করবে না, পাশাপাশি মহিলারা, শিশুরা এবং প্রবীণরাও নিশ্চিন্তে পূজা উপভোগ করতে পারবেন, যা শহরের উৎসবের চিত্রে এক নতুন উদাহরণ তৈরি করেছে।
এই উদ্যোগকে কেন্দ্র করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছে এভাররেডির ‘সাইরেন টর্চ’। দেখতে সাধারণ টর্চলাইট হলেও এর ভেতরে রয়েছে শক্তিশালী নিরাপত্তা ব্যবস্থা। 100 ডি বি-র ভলিউমে বাজে এমন অ্যালার্ম সিস্টেমের সঙ্গে টর্চটিতে রয়েছে বিশেষ চেন, যা টানলেই মুহূর্তের মধ্যে সাহায্যের সংকেত ছড়িয়ে পড়ে। ভিড়ের মধ্যে পথ হারানোর আশঙ্কা থেকে শুরু করে কোনও বিপদে পড়লে এই টর্চ মহিলাদের জন্য কার্যকর সঙ্গী হতে পারে। ফলে উৎসবের ভিড় উপভোগ করার সময়েও নিরাপত্তায় কোনও খামতি রাখেনি এই ব্যবস্থা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এভাররেডির সিইও অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, দুর্গাপুজো শুধুই উৎসব নয়, এটি শুভর জয়ের প্রতীক। তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠানে নারীশক্তিকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হয় এবং সেই ভাবনাকে সমর্থন করেই নেওয়া হয়েছে এই পদক্ষেপ। তাঁর কথায়, বড় উৎসবের সময় প্রত্যেক নারীর স্বচ্ছন্দ্যবোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। তাই এই ‘সুরক্ষা দ্বার’ উদ্যোগকে তিনি তুলে ধরেছেন ক্ষমতায়ন ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে।
আরও পড়ুনঃ বাংলা ধারাবাহিকের টিআরপি যুদ্ধে ফের শীর্ষস্থান দখল করল ‘পরিণীতা’! ‘জগদ্ধাত্রী’ ও ‘ফুলকি’র মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই! পিছিয়ে পড়ল স্টার জলসার ‘রাঙামাতি’!
উদ্যোগের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন অভিনেত্রী কৌশানি মুখোপাধ্যায়ও। তিনি বলেছেন, দুর্গাপুজো ঐক্য ও আনন্দের প্রতীক হওয়ার পাশাপাশি নারীশক্তির প্রতিফলন। তাই প্রত্যেক মহিলার অধিকার রয়েছে এমন এক পরিবেশে উৎসব উদযাপন করার, যেখানে তারা নির্ভয়ে ভিড়ের অংশ হতে পারেন। তাঁর মতে, এভাররেডির এই পদক্ষেপ সেই নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি বহন করছে। বিশেষ অ্যালার্ম যুক্ত টর্চটিকে তিনি বলেছেন কার্যকর হাতিয়ার—যা নারীদের ভরসা দেবে এবং যেকোনও বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে তাত্ক্ষণিক সাহায্য নিশ্চিত করবে। এছাড়াও মহিলাদের উদ্দেশ্যে অভিনেত্রী জানিয়েছেন ‘ভিড়ে অভদ্রতা দেখলে হাত চালিয়ে দেবে’। এইভাবে দুর্গাপুজোয় শহরের আলো ঝলমলে আঙ্গিনায় আনন্দের পাশাপাশি মিলেছে এক নতুন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা।