দেখতে দেখতে দুটো মাস পেরোলো, ঐন্দ্রিলা শর্মা আমাদের সাথে নেই। জীবনসঙ্গিনীর স্মৃতি আঁকড়েই জীবনের ছন্দে ফিরতে চলেছেন অভিনেতা সব্যসাচী চৌধুরী। বামাক্ষ্যাপার পর এবার স্টার জলসার ধারাবাহিক রামপ্রসাদের চরিত্রে অভিনয় করছেন তিনি। সূত্রের খবর, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে তার শ্যুটিং শুরু হবে। এর মাঝেই এক সাক্ষাৎকারে সব্যসাচী বলেন, “যে কোনও চরিত্রের জন্যই একটা প্রস্তুতি প্রয়োজন হয়। আপাতত সেই প্রস্তুতিটাই করছি নিজের মতো করে। এখনও শ্যুটিং ফ্লোরে গেলে একটা দ্বিধাবোধ তৈরি হয়। মনে হয়, যা মনে মনে ভাবছি, সেটাই পর্দায় ফুটিয়ে তুলতে পারব তো?”
ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর পর থেকে তিনি নিজেকে অনেক একা করে ফেলেছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়াতেও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। ঐন্দ্রিলা যখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছিলেন, তখন তিনি বলেছিলেন, “বড়মা রাখলে কারোর সাহস নেই প্রাণ কেড়ে নেওয়ার”। তখন থেকেই অনেকে আন্দাজ করেছিলেন সব্যসাচী ঈশ্বরে বিশ্বাসী। বর্তমানের এই সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন ব্যক্তিগত স্তরে কোনও মূর্তিপূজায় তিনি বিশ্বাস করেন না। তবে শুটিং-এর জন্য যতক্ষণ লাল বস্ত্র পরিধান করে ছিলেন তারা মা ছাড়া আর কিছুই বুঝতেন না।
তিনি জানান, ঐন্দ্রিলার জন্য নানান মন্দিরে-মসজিদে প্রার্থনা করছেন ভক্তরা। সেই আশীর্বাদী ফুল এবং প্রসাদ এনেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ঐন্দ্রিলাকে ফেরানো সম্ভব হয়নি। সাক্ষাৎকারে অভিনেতা বলেন, “আমি ঈশ্বরকে অস্বীকার করছি না। নিজের ব্যক্তিগত কঠিন সময়ে সকলেই তাঁর কাছে প্রার্থনা করেন। সেটা ঠিক ভুল বিচারের সময় না”। পরপর তিনি সাধরের চরিত্র করার জন্য অনেকেই মনে করতে পারেন দিন দিন তিনি টাইপকাস্ট হয়ে পড়ছেন।
তবে সব্যসাচী এই বিষয়ে জানিয়েছেন, “আমি মনে করি না, আমাকে টাইপকাস্ট করা হচ্ছে। কেউ আমাকে এই চরিত্রগুলো করতে জোর করেননি। আমার নিজের এই ধরনের কাজগুলি করতে ভাল লাগে। তার মানে এই নয় যে, আমি অন্য ধরনের গল্প পছন্দ করি না। কাজের মধ্যেই আমি আনন্দ খুঁজি। আমি কোন কোন ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে পারি, সেটা দেখাতে কিছু করতে চাই না। আমার কাউকে কিছু প্রমাণ করার নেই।”
এমনকি ধারাবাহিকের শ্যুটিংয়ের চাপ সামলে ক্যাফেতেও তিনি সময় দেবেন বলে জানালেন তিনি। সব্যসাচী বলেন, “ক্যাফেটা আমি, সৌরভ আর দিব্য মিলে ক্যাফেটা করেছিলাম। আমাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ডিপার্টমেন্ট আছে। আমার দায়িত্ব মেনু আর রেসিপি। হোঁদলস নিয়ে আরও নতুন ভাবনাচিন্তা রয়েছে, কাজ সামলেই সে সব করব আমরা।” এসবের মাঝেই তিনি ও জানালেন সোশ্যাল মিডিয়ায় ফিরতে নারাজ তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এখনো রয়েছে চারিদিকে ঐন্দ্রিলার স্মৃতি, টাইমলাইনে মাঝেমধ্যেই উঁকি দেয় তাঁর মিষ্টির হাসিমুখ। স্মৃতির পাতায় বন্দী সেসব মুহূর্ত হয়তো আবার ভেঙে চুরমার করে দিতে পারে তাঁকে! তার জন্যই কি এরূপ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সব্যসাচী? উত্তরে তিনি বলেন, “কিছুটা হলেও তাই”।