বর্তমান বিনোদন দুনিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়া যেন জনপ্রিয়তার নতুন মাপকাঠি। কত ফলোয়ার, কত রিল ভাইরাল, কোন পোস্টে কত লাইক—এই সব সংখ্যাই আজ অনেক সময় কাজ পাওয়ার মানদণ্ড হয়ে দাঁড়াচ্ছে। নতুন মুখ থেকে প্রতিষ্ঠিত শিল্পী, সকলের ক্ষেত্রেই যেন অদৃশ্য চাপ—ডিজিটাল জনপ্রিয়তা না থাকলে সুযোগ মিলবে তো? কিন্তু এই ধারণা কি সত্যিই অবিচল, নাকি এর আড়ালেও রয়েছে ভিন্ন বাস্তবতা—সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে ইন্ডাস্ট্রির অন্দরে।
এই প্রেক্ষাপটেই আবার আলোচনায় ফিরেছেন বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম সফল মুখ পল্লবী শর্মা। ‘কে আপন কে পর’-এর জবা কিংবা ‘নিম ফুলের মধু’-র পর্ণা—এই দুই চরিত্রেই দর্শকের মনে পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ৯ মাসের বিরতির পর ১৫ ডিসেম্বর থেকে জি বাংলার নতুন মেগা-তে নায়িকা হিসেবে ফিরছেন পল্লবী। এই ধারাবাহিকে তাঁর চরিত্রের নাম রূপমঞ্জরী—এক বনেদি পরিবারের দায়িত্বশীলা বউমা, যাকে কেন্দ্র করেই এগোবে গল্পের মূল স্রোত।
পর্দার ঝলমলে সাফল্যের আড়ালে পল্লবীর বাস্তব জীবন কিন্তু মোটেও সহজ ছিল না। হাওড়ার এই অভিনেত্রী খুব অল্প বয়সেই মা-বাবাকে হারান। মায়ের চিকিৎসার সময় পরিবার ছিন্নভিন্ন, ক্লাস টেনের পরীক্ষার প্রথম দিনেই বাবার মৃত্যুসংবাদ—সবকিছুর মাঝেও বাবার ইচ্ছাকে সম্মান জানিয়ে পরীক্ষায় বসেছিলেন তিনি। অভিনয়ের পথেও এসেছেন পারিবারিক সূত্রে—পিসির হাত ধরেই স্টুডিয়ো যাতায়াত, সেখান থেকেই শুরু তাঁর ছোটপর্দার সফর।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে পল্লবী স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন, “বর্তমান সময়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে ফলোয়ার্স না থাকলে কাজ পাওয়া যায় না”—এই ধারণায় তিনি বিশ্বাসী নন। তাঁর মতে, সময় বদলেছে ঠিকই, কিন্তু কাজের প্রতি সততা আর পরিশ্রমের বিকল্প কিছু নেই। ফলোয়ার্স হয়তো সাময়িক আলো এনে দিতে পারে, কিন্তু দীর্ঘদিন দর্শকের ভালোবাসা ধরে রাখতে পারে একমাত্র অভিনয়ের মানই।
আরও পড়ুনঃ অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতে শানুর কাছ থেকে তিনি মানসিক ও শারীরিক অ’ত্যা’চারের শিকার হয়েছিলেন তিনি! এবার সেই প্রাক্তন স্ত্রীর কাছে ৩০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি গায়কের!
পল্লবীর বিশ্বাস, চরিত্রের মধ্যেই একজন অভিনেত্রীর আসল পরিচয়। তাই তিনি কাজ বাছাইয়ে তাড়াহুড়ো করেন না, এক চরিত্র শেষ হলে তার রেশ কাটার সময় নেন। সোশ্যাল মিডিয়ার সংখ্যার থেকেও দর্শকের মনে জায়গা করে নেওয়াকেই তিনি বড় সাফল্য বলে মনে করেন—আর সেই দর্শকই শেষ পর্যন্ত শিল্পীর আসল ফলোয়ার।
