জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“আমার প্রিয় অভিনেত্রী মা!” “যদি সুযোগ পাই, মায়ের সঙ্গেই অভিনয় করব!”—মায়ের প্রতি আবেগাপ্লুত ছেলে! সন্তানকে ফোনের নেশা থেকে বাঁচাতে বোর্ডিং স্কুলে পাঠিয়েছিলেন পুষ্পিতা, বহুদিন পর জনসমক্ষে আনলেন নিজেই!

অভিনেত্রী ‘পুষ্পিতা মুখোপাধ্যায়’ (Pushpita Mukherjee) -এর জীবনেও একসময় এসে তীব্র দুশ্চিন্তার ছায়া নেমেছিল। পেশাগতভাবে সফল হলেও ব্যক্তিগত জীবনে ছেলের প্রতি একরাশ চিন্তা তাঁকে অস্থির করে তুলেছিল। পুষ্পিতা জানতেন, তাঁর সন্তান স্মার্টফোন আর অনলাইন গেমের নেশায় এতটাই জড়িয়ে পড়েছে যে স্বাভাবিক জীবনযাপন কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। পড়াশোনায় মন নেই, উপদেশে কাজ হয় না, এমনকি বহুবার চেষ্টা করেও সেই আসক্তি থেকে ছেলেকে বের করে আনতে পারেননি তিনি। সেই কারণেই একসময় মা হিসেবে নিজেকে ব্যর্থ মনে করতেন পুষ্পিতা।

এই যন্ত্রণার কথা তিনি জনসমক্ষে শেয়ার করেছিলেন ‘দিদি নম্বর ১’-এর মঞ্চে। রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে দাঁড়িয়ে কান্নাভেজা গলায় বলেছিলেন, কীভাবে তাঁর সন্তান ধীরে ধীরে প্রযুক্তির নেশায় ডুবে যাচ্ছে, আর মা হিসেবে তিনি অসহায় হয়ে পড়ছেন। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, “আমরা দু’জন মিলে সব কিছু করেছি, ওকে বিভিন্ন জিনিসে ভর্তি করিয়েছি, প্রচুর টাকা খরচ করেছি, তবুও কোনও উন্নতি হয়নি।” গেমিং আসক্তির ফলে ছেলের পড়াশোনা, মানসিক স্থিতি, সব কিছুতেই ধ্বস নেমেছিল, যা একসময় পুষ্পিতাকে মানসিকভাবে ভেঙে দেয়।

শেষমেশ তাকে পাঠিয়ে দেন দিল্লির একটি বোর্ডিং স্কুলে। উদ্দেশ্য ছিল একটাই— প্রযুক্তির আসক্তি থেকে দূরে রেখে ছেলেকে একটা শৃঙ্খলাবদ্ধ পরিবেশে ফিরিয়ে আনা। যদিও ছেলেকে ছেড়ে থাকার অভ্যেস ছিল না তাঁর, তবুও সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছিলেন পুষ্পিতা। স্বামী কর্মসূত্রে দিল্লিতেই থাকতেন, কিন্তু ছেলেকে তাঁর কাছেও না রেখে হস্টেলে থাকার ব্যবস্থাই করেছিলেন অভিনেত্রী, যাতে ছেলেটি নিজেকে গুছিয়ে নিতে পারে। কঠিন সিদ্ধান্ত হলেও, পুষ্পিতার আশা ছিল— এই বদল একদিন সন্তানের জীবনে সুস্থ ও স্থিতিশীল পরিবর্তন আনবে।

তারপর কেটে গেছে বেশ কিছুদিন। এদিন বন্ধু এবং সহকর্মী সুদীপ্তা চক্রবর্তীর অনুরোধে তাঁর নতুন ছবি ‘আপিস’-এর প্রিমিয়ারে উপস্থিত ছিলেন পুষ্পিতা মুখোপাধ্যায়। এই দিনই বড় হওয়ার পর প্রথম জনসমক্ষে আনলেন ছেলেকে। অনেকদিন ধরে পর্দায় দেখা নেই পুষ্পিতার, সাংবাদিকরা প্রশ্ন করতেই উত্তর দিয়েছেন হাসিমুখে। অভিনেত্রী বলেন,”আমি খুব ঘরকুনো, আমায় টেনে না বের করলে হাজারটা বাহানা দেখিয়ে বেরোই না। আজ সুদীপ্তা টেনে বের করেছে তাই এসেছি।”

ছেলেকে প্রশ্ন করা হয়, মায়ের কাজ কেমন লাগে? উত্তরে স্বগর্বে সে বলে,”মায়ের যত ছবি দেখেছি সবগুলোতে মায়ের অভিনয়ই সেরা লেগেছে। আমার কাছে আমার মা প্রিয় অভিনেত্রী।” ভবিষ্যতে কি মায়ের মতো অভিনয়ে আসার ইচ্ছা আছে? উত্তরে সে বলে,”ব্যবসা নিয়ে পড়তে চাই, অভিনয় করার তেমন সুযোগ পাবো বলেও মনে করি না। তবে কোনদিনও যদি পাই, মায়ের সঙ্গে অভিনয় করতে চাই।” পুষ্পিতাও বলেন, ছোট থেকে তার সঙ্গে সেটেই থাকত ছেলে। তাই এবার যদি একসঙ্গে অভিনয় করতে পারেন তবে আনন্দই হবে।

Piya Chanda

                 

You cannot copy content of this page