বাংলা চলচ্চিত্র জগতে রুক্মিণী মৈত্র(Rukmini maitra) এক সুপ্রতিষ্ঠিত নাম। মডেলিং দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও, খুব অল্প সময়েই তিনি নিজেকে অভিনয় জগতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ‘চ্যাম্প’ সিনেমার মাধ্যমে তাঁর বড়পর্দায় আত্মপ্রকাশ ঘটে, এরপর একের পর এক সফল ছবিতে অভিনয় করেছেন। অভিনয় দক্ষতা, সৌন্দর্য ও ব্যক্তিত্বের জন্য তিনি খুব দ্রুত দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। বাংলা চলচ্চিত্রের পাশাপাশি তিনি বলিউডেও কাজ করেছেন এবং সেখানে যথেষ্ট প্রশংসা পেয়েছেন। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া ‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি আবারও শিরোনামে এসেছেন।
‘বিনোদিনী: একটি নটীর উপাখ্যান’ সিনেমাটি উনবিংশ শতাব্দীর প্রখ্যাত থিয়েটার শিল্পী বিনোদিনী দাসীর জীবনকে কেন্দ্র করে নির্মিত হয়েছে। এই সিনেমার পরিচালক রাম কমল মুখোপাধ্যায়। বিনোদিনী ছিলেন বাংলা থিয়েটারের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, যিনি সমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করে নিজের নাম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁর সংগ্রামী জীবন, শিল্পের প্রতি ভালোবাসা এবং থিয়েটারের প্রতি অবদানই এই সিনেমার মূল উপজীব্য। সিনেমাটির চিত্রনাট্য, প্রোডাকশন ডিজাইন ও রুক্মিণীর অভিনয় ইতিমধ্যেই দর্শকদের মন জয় করেছে।
মুক্তির পর থেকেই সিনেমাটি ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। দর্শক থেকে সমালোচক, সকলেই সিনেমাটির শক্তিশালী কনটেন্ট ও রুক্মিণীর অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। সিনেমাটির বিশেষ স্ক্রিনিংও অনুষ্ঠিত হয়েছে, যেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন। শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও সিনেমাটি সমানভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য এটি এক বড় অর্জন, কারণ ‘বিনোদিনী’ শুধুমাত্র বাংলা দর্শকদের নয়, বিশ্ব দর্শকদের মন জয় করেছে।
আরও পড়ুনঃ ছোট্টো বয়সেই অলিম্পিয়াডে নাম উঠল অনুমেঘার, মিঠাইয়ের মিষ্টিকে নিয়ে গর্বিত বাংলা
সম্প্রতি, সাউথ এশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পুরস্কার জিতেছে ‘বিনোদিনী’। পরিচালক রাম কমল মুখোপাধ্যায় সেরা পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন, রুক্মিণী মৈত্র সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছেন, এবং সিনেমাটি ‘বেস্ট অডিয়েন্স চয়েস’ ক্যাটাগরিতেও বিজয়ী হয়েছে। এটি প্রথম বাংলা ছবি যা একসঙ্গে তিনটি বিভাগে পুরস্কার পেল। এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত পরিচালক রাম কমল বলেন, “এই সম্মান শুধু আমার নয়, গোটা টিমের জন্য এক বিশাল অর্জন।”
এই আন্তর্জাতিক সাফল্য বাংলা চলচ্চিত্রের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত। রুক্মিণী মৈত্র বলেন, “এটা আমার কেরিয়ারের অন্যতম সেরা মুহূর্ত। বিনোদিনী চরিত্রে অভিনয় করা আমার জন্য অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ছিল। বিদেশের মাটিতে ছবিটি এত বড় স্বীকৃতি পাবে, তা কল্পনাও করিনি।” এই সাফল্য বাংলা চলচ্চিত্রকে বিশ্বদরবারে নতুন করে পরিচিতি দেবে বলেই মনে করছেন অনেকেই। চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞদের মতে, ‘বিনোদিনী’র এই সাফল্য ভবিষ্যতে বাংলা সিনেমার আন্তর্জাতিক বাজারকে আরও প্রসারিত করতে সাহায্য করবে।