বাংলা ছবিতে একসময় সেরা খলনায়িকা ছিলেন অভিনেত্রী ‘সংঘমিত্রা ব্যানার্জি’ (Sanghamitra Bandyopadhyay)। তাঁর জীবনের গল্প যেন রূপকথার চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। ছবিতে তাঁকে খলনায়িকার চরিত্রে দেখা গেলেও, বাস্তব জীবনে ততটাই ভালো ও মেধাবী একজন মানুষ তিনি। পড়াশোনায় দারুণ কৃতিত্বের অধিকারী ছিলেন এই অভিনেত্রী। বেনারসে জন্ম হলেও ছোটবেলা থেকেই কলকাতায় বসবাস। অভিনেত্রী নয় অন্য স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি! কিন্তু কিভাবে এলেন অভিনয় জগতে?
প্রেসিডেন্সি কলেজে পড়াশোনা, সংস্কৃত নিয়ে অনার্স এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স, এই সবকিছুই ছিল এক মেধাবী ছাত্রী হিসেবে তাঁর পরিচিতি। কিন্তু ভাগ্য তাঁকে পৌঁছে দেয় রূপালি পর্দার জগতে। ছোটবেলা থেকেই কঠোর নিয়মে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন সংঘমিত্রা। শুধুমাত্র পড়াশোনাই নয়, নৃত্যশিল্পেও ছিল তাঁর দারুন দখল। বিভিন্ন স্বনামধন্য গুরুদের কাছ থেকে শাস্ত্রীয় নৃত্যের শিক্ষা নেন তিনি।
এমনকি টোকিও থেকেও ক্লাসিকাল ডান্সে ডিপ্লোমা লাভ করেন। একদিকে যখন পড়াশোনার দৌলতে ভবিষ্যৎ প্রফেসর হওয়ার স্বপ্ন, অন্যদিকে নাচের প্রতি ভালোবাসাও সমানতালে বাড়তে থাকে। সংঘমিত্রার অভিনয়ে আসার গল্পটিও যেন ভাগ্যের লিখন। মহানায়ক উত্তম কুমারের ‘কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী’ ছবির অডিশনে শুধুমাত্র তাঁকে সামনে থেকে দেখার জন্য উপস্থিত হয়েছিলেন সংঘমিত্রা।
কোনও প্রস্তুতি বা আশা ছাড়াই অংশ নেন সেই অডিশনে, আর সেখানেই ঘটে জীবনের মোড় ঘোরানো ঘটনা। প্রথম শটেই উত্তম কুমারের নজরে পড়ে যান তিনি। তারপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। চলচ্চিত্রে তাঁর যাত্রা শুরু হয় সেই মুহূর্তে। সংঘমিত্রা ব্যানার্জির জীবনের এই অধ্যায়টা প্রমাণ করে দেয়, কখনও কখনও পরিকল্পনা করার থেকেও বেশি ভাগ্যের উপর সবটা ছেড়ে দিয়ে প্রবাহের সঙ্গে চলতে হয়।
আরও পড়ুনঃ রাজবাড়িতে ধানু-আদিত্যর দাম্পত্যের শুভ সূচনা! বড় রানীকে নিয়ে ফুলকির কৌতূহল আরও তীব্র! বড় রানীর অতীত থেকে এবার কি পর্দা উঠতে চলেছে? ফুলকি কি জেনে যাবে সে তাঁরই মা?
সবচেয়ে বেশি করে নিজের উপর বিশ্বাস রাখতে হয়। অভিনেত্রী হিসেবে তিনি যতটা সফল, তার চেয়েও বড় তাঁর জীবনের এই অধ্যায়, একজন অধ্যাপনার স্বপ্ন দেখা ছাত্রী থেকে হয়ে ওঠা বাংলা সিনেমার খ্যাতনামা খলনায়িকা। তিনি আজ অনেকের কাছে অনুপ্রেরণা, যারা নিজের গণ্ডির বাইরে কিছু ভাবতে চান।