জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

‘ওর আজ ভালো হচ্ছে, আমার গতকাল ভালো ছিল…হিংসা হয় না, ভালোই লাগে!’ সমবয়সী দিতিপ্রিয়া টলিউডে দাপাচ্ছেন, নিজের অবস্থান নিয়ে তিথির নির্ভীক মন্তব্য! সহশিল্পীর সাফল্য ও নিজের সুযোগ না-পাওয়া নিয়ে ঈর্ষা বা তিক্ততা নেই, আছে প্রশংসা করার সাহস! প্রশংসায় পঞ্চমুখ নেটপাড়া!

একসময় স্টার জলসার ‘মা’ ধারাবাহিকের খুদে ‘ঝিলিক’ হিসেবে বাঙালির ঘরে ঘরে পরিচিত হওয়া সেই ‘তিথি বসু’কে (Tithi Basu) আজ আর পর্দায় নিয়মিত দেখা যায় না। কিন্তু তাঁর প্রতি দর্শকের কৌতূহল আজও একটুও কমেনি। অন্যান্য শিশুশিল্পীদের মতো ছোটবেলায় অত জনপ্রিয়তা পাওয়া সত্ত্বেও, বড় হয়ে অভিনয়ের সুযোগ যেন তত সহজে মেলেনি তাঁর ভাগ্যে! লকডাউনের আগে-পরে বেশ কিছু চরিত্রের প্রস্তাব এলেও, গল্প বা চরিত্র পছন্দ না হওয়ায় তিনি নিজেই অনেকটা পিছিয়ে এসেছেন।

এমনও হয়েছে যে চূড়ান্ত তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও শেষ মুহূর্তে তাঁকে বাদ দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন অজুহাতে। তবুও তাঁর গলায় ক্ষোভ নয়, বরং আছে একটা স্থিরতা, নিঃসন্দেহে যেটা তাঁর বয়সী অন্যদের তুলনায় তাঁকে আলাদা করে দেয়। অন্যদিকে, একই বয়সী দিতিপ্রিয়া রায় (Ditipriya Roy) এখন টেলিভিশনের প্রথম সারির মুখ। রানী রাসমণির মতো জনপ্রিয় চরিত্র থেকে শুরু করে বিভিন্ন ছবিতে অভিনয় আবার বর্তমানে নতুন ধারাবাহিকে নানান বিতর্কের কেন্দ্রেও থাকছেন তিনি। আর এই তুলনাটাই অনেকের মনে প্রশ্ন তুলেছে!

প্রশ্ন উঠছে, যে তিথিকে একদিন প্রধান চরিত্রে দেখেছে দর্শক, সেই তিথি কেন আজও সুযোগ পাচ্ছেন না? সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তাই তাঁকে সরাসরি জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, তাঁর সহ অভিনেত্রী একসময় তার ধারাবাহিকের পার্শ্ব চরিত্রে অভিনয় করতে, তিনি আজ সর্বত্র জনপ্রিয়, এই অবস্থায় তাঁর মন কি খারাপ হয় না? প্রশ্নটা আঘাত করার মতো হলেও তিথির উত্তর ছিল খুব শান্ত, খুব পরিণত। তিনি বলেন, “এতে খারাপ লাগার তো কিছু নেই, বরং ভালো লাগছে আমার ওর সাফল্য দেখে!

ওর আজকে ভালো হচ্ছে, আমার গতকাল ভালো ছিল আবার কপালে থাকলে আগামীতেও ভালো হবে। তবে, আমি শুনেছি ওর পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর জন্যই অভিনয়ে আসা, সেখান থেকে আজকে যে সাফল্য পেয়েছে আমার খুব ভালো লাগে দেখলে। একটা সময় আমার পরিবারেও অনেক সমস্যা হয়েছিল, সেই জন্য বলব যে এই সমস্যার মধ্যে দিয়ে যে গেছে সেই জানে কতটা পরিশ্রম লুকিয়ে আছে সাফল্যের পেছনে।”

তাঁর এই কথায় ঈর্ষা নেই, প্রতিযোগিতার হিংসা নেই বরং অন্যের সাফল্যকে সম্মান করার একটা শিক্ষণীয় মনোভাব আছে। তিথি আরও জানিয়েছেন, তাঁর কাজের সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছেন বাবা-মা, কারণ তখন পড়াশোনাকেই তাঁদের কাছে প্রধান মনে হয়েছে। কলেজে পড়তে পড়তে কিছু কাজ করলেও, মহামারির ধাক্কায় পুরোপুরি থেমে যায়। সেই সময় নিজের মতো করে ভ্লগিং শুরু করেন তিনি। এদিন অভিনেত্রী এই বক্তব্য শুনে সমাজ মাধ্যমে প্রশংসা করেছেন অনেকেই, তাঁর চিন্তাধারার।

তবে, তিথির কথায় বারবার ফিরে এসেছে একটি জিনিস, ধৈর্য। চাইলেই হয়তো তিনি আরও আগেই ফিরে আসতে পারতেন, কিন্তু যেটা বিশ্বাস করেন না সেটা করতে চান না তিনি। তাই এখন অপেক্ষা করছেন ঠিক চরিত্রের, ঠিক গল্পের। শিশু শিল্পী হিসেবে দারুণ সাফল্য পাওয়ার পরও বাস্তব জীবনের কঠিন অভিজ্ঞতা তাঁকে আরও পরিণত করেছে। অন্যের সাফল্যে ঈর্ষা না করে প্রশংসা করতে পারা, কজনের পক্ষে সম্ভব? তিথির এই মানসিকতা হয়তো পরবর্তীতে তাঁর সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে উঠবে।

Rimi Datta

রিমি দত্ত কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। কপি রাইটার হিসেবে সাংবাদিকতা পেশায় চার বছরের অভিজ্ঞতা।