স্টারকিড, এই শব্দটা শুনলেই সাধারণ মানুষের মাথায় আসে এক বিলাসবহুল জীবন যা কিনা সেই বাচ্চা পায় তাঁর পরিবারের জন্য। বর্তমানে, এই স্টারকিডদের (Starkid) নিয়েও চলে সমালোচকদের মধ্যে চলেছে সমালোচনা। কিন্তু, আজকের দিনের স্টারকিড আর ৯০দশকের স্টারকিডের মধ্যে রয়েছে আসমান-জমিনের ফারাক। টলিউড (Tollywood) হোক কিংবা বলিউড সেই সময়ের প্রায় সকল স্টারকিডরা নিজেদের চেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
চুমকি চৌধুরী, ৯০দশকের বাংলা সিনেমায় অন্যতম জনপ্রিয় মুখ। অঞ্জন চৌধুরীর কন্যা চুমকি বরাবরই শান্ত স্বভাবের মেয়ে। বাংলার অন্যতম জনপ্রিয় পরিচালকের মেয়ে হয়েও জীবনে কম বাধা-বিপত্তি পেয়েছেন তিনি। জীবনের বাবা এবং মায়ের মৃত্যু, ভাইয়ের চলে যাওয়া এমনকি প্রথম স্বামীকেও হারিয়েছেন তিনি। ভগবানের লীলা খেলায় ধৈর্যশক্তির কাছে বারে বারে হেরে গিয়েছেন চুমকি।
১৯৯০ সালের গোড়ার দিকে বাবা অঞ্জন চৌধুরীর হাত ধরে টলিউড ইন্ডাস্ট্রিতে অভিনয় জীবনের সূচনা হয়। অভিনয় জীবনে চুমকির প্রযোজক দেবেশ ঘোষ এর ছেলে লোকেশ ঘোষের সঙ্গে প্রেম হয় এবং পরবর্তীকালে তা বিয়েতে পরিণতি পায়। কিন্তু, বণিবনা না হওয়া সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকেই এই দুই অভিনেতা অভিনেত্রী সিনেমা জগত থেকে আস্তে আস্তে নিজেদেরকে সরিয়ে নিতে থাকে। ২০০৭ সালে অভিনেত্রীর পিতৃবিয়োগে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন। এই বছরই চুমকি দ্বিতীয়বার বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেয়। অঞ্জন কন্যা চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক সজল ভট্টাচার্যকে বিয়ে করেন।
আরও পড়ুনঃ গোপনে বিয়ে সারলেন রণজয়ের প্রাক্তন প্রেমিকা অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা মন্ডল! পাত্র কে?
প্রথম বিবাহিত জীবনে অসুখী চুমকি চৌধুরী পরিচালক সজলের সঙ্গে বিয়ে করে বেজায় সুখী ছিলেন। স্বামী-স্ত্রীয়ের জুটি ছিল একে অপরের পরিপূরক। সজল ভট্টাচার্য বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হওয়ায় অমিতাভ বচ্চনের সঙ্গে ২০১৫-তে ‘পিকু’ ছবিতে অভিনয় করার সুযোগ পান। এইসব সুখ চুমকির জীবনে বেশি দিন সইলো না, জীবনে নেমে এলো বিপর্যয়। ২০২১ সালে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সজল ভট্টাচার্য চুমকিকে ছেড়ে চলে যান না ফেরার দেশে। স্বামীর মৃত্যু শোক কাটতে না কাটতেই অভিনেত্রীর মা মারা যান ২০২২ সালে। একের পর এক কাছের মানুষ খুব দ্রুতই তাকে ছেড়ে চলে যান। বর্তমানে অভিনেত্রী একাই নিজের মতন করে জীবন যাপন করে। এত কিছু হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও অভিনেত্রী জীবন থেকে অভিনয়কে বাদ দিতে পারেননি। এই সময় অভিনেত্রী কে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে স্টার জলসা ‘রোশনাই’ ধারাবাহিক। অভিনেত্রীর এই জীবন কাহিনী শুনে অনেক দর্শকেরাই মনে করছেন, ‘রিল দুনিয়া আর রিয়েল দুনিয়ার পার্থক্য আছে বইকি’।