‘চৈতন্য মহাপ্রভু’ ছিল একসময়ের অন্যতম জনপ্রিয় সিরিয়াল। চৈতন্যর ভূমিকায় যিনি অভিনয় করেছিলেন আজ তিনি সারা ভারতে জুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন অভিনয় জগতে। হিন্দি, বাংলাকে পেরিয়ে গিয়েও তামিল ও তেলেগু ভাষাতেও কাজ করছেন এই অভিনেতা, নাম যীশু সেনগুপ্ত (Jishu Sengupta)। বিনোদন জগতে ছোট পর্দা দিয়ে কাজ শুরু করলেও পরবর্তীকালে বড় পর্দায় দেখা গিয়েছে অভিনেতাকে। এক সময় সুপার ফ্লপ হিরো আজকের সুপারহিট স্টার। জীবনের এই পথ চলাটা খুব একটা সহজ ছিল না বলেই দাবি করেন অভিনেতা। ঘাত-প্রতিঘাত, বাধা সবকিছুকে ছাপিয়ে আজকে সাফল্যের চূড়ায় যীশু।
ক্যারিয়ার জীবনে সফলতা এলেও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে নেটিজেনদের কাছে সমালোচিত হন এই অভিনেতা। গত বছরের ডিসেম্বরে মুক্তি পেয়েছে দেব এবং যীশু অভিনীত ‘খাদান’। আর এই ছবি নিয়েই চারিদিকে চলছে জয়জয়কার। দুই অভিনেতার অভিনয়ের প্রশংসায় বয়ে যাচ্ছে সিনেমা হল থেকে সমাজ মাধ্যম। ইতিমধ্যে যীশুর সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকার বেশ নজর কেড়েছে দর্শকদের। অভিনেতা নয়, একজন প্রাণ খোলা মানুষ হয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন যীশু।
সাক্ষাৎকারের শুরুতেই অভিনেতা জানেন খাদানে সাফল্যের জন্য তিনি ভীষণ খুশি। বাংলা ইন্ডাস্ট্রির জন্য এই সাফল্যটা খুব জরুরি ছিল বলে মনে করেন তিনি। মাস ফিল্ম চলা যেকোনো ইন্ডাস্ট্রির জন্যই ভীষণ জরুরী বলে দাবি তাঁর। অভিনেতার কথায় তিনি নিজের অভিনীত কোন সিনেমাই কোনদিন দেখেন না। তাঁর মতে, “নিজেকে স্ক্রিনে দেখতে আমার অদ্ভুত লাগে”। যীশুর কথায়, ‘খাদান’ বাংলা মাটির গল্প’ এই ছবিতে বাংলার গন্ধ রয়েছে যেটা আগে ছিল। আগেকার ছবিতে বাঙালিয়ানা ছিল কিন্তু বর্তমানে ধীরে ধীরে এই গন্ধটা হারিয়ে যাচ্ছিল।
খাদানের চরিত্র নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অভিনেতা বললেন, “আমার কাছে চরিত্র ইজ মোর ইম্পরট্যান্ট, যে ছবির টাকা কামাই সেটাই আমার কাছে কমার্শিয়াল ছবি।” যীশুর কাছে চরিত্রই সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা সে নাকি চরিত্র হোক কিংবা খলনায়কের। বলিউডের সাথে টলিউডের তুলনা করতে গিয়ে অভিনেতা বলেন, “আমরা যে ক্যানভাসে তৈরি করি, ওরা সেটা কল্পনাও করতে পারবে না। সুতরাং আমরা ওদের থেকে এগিয়ে আছি”। সিনেমার শুটিং শুরু হওয়ার আগে যীশু দেবকে বলেছিল, “বাংলায় দাঁড়িয়ে তোর ভাবনা বাস্তবায়িত হবে কী করে?”
নিজের জীবনের স্ট্রাগল নিয়ে কথা বলতে গিয়ে যীশু বলেন, “যখন আমার সময় ঠিক থাকবে, আই উইল বি দ্য মোস্ট ওয়ান্টেড ম্যান, যখন সময় থাকবে না নো ওয়ান ইভেন লুকড মি”, তাই এখন তার সময় এসেছে বলে দর্শকেরা তাকে ভালোভাবে নিচ্ছে। এমনকি অভিনেতা এও বলেন, “একটা সময় আসবে যখন লোকে বলবে, না না এসব যীশুকে নিস না” এই বলে খানিকটা মনের ভয় প্রকাশ করলেন তিনি। যীশুর কথায়, একটা সময় ছিল ইন্ডাস্ট্রিতে বলা হত, “যীশুকে নিস না যীশু আনলাকি”। এমনও দিন গিয়েছে যেখানে দেব বা প্রসেনজিৎকে নেওয়া যাচ্ছে না বলে তাঁকে নেওয়া হয়েছে বলে দাবি অভিনেতার।
আরও পড়ুনঃ অস্কারের দৌড়ে বাংলা ছবির নতুন ইতিহাস, ‘পুতুল’ এবার সেরা ছবি বিভাগে মনোনীত!
মেয়ে সারার কথা জিজ্ঞাসা করাতে অভিনেতা বলেন, “সারা অভিনয় করতে চায়”। অভিনয় আসার আগে তারা বাবা তাকে বলেছিল, “তোমাকে তোমার জায়গা নিজেকে খেটেই তৈরি করতে হবে”। ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে জিজ্ঞাসা করতে গেলে কষ্ট বক্তার মত জবাব দেন, বলেন সে তার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে কারো সামনে আলোচনা করতে অনিচ্ছু, যে বা যারা তাকে নিয়ে লেখালেখি করছেন চালিয়ে যেতে বললেন অভিনেতা।