অনেকেই আমারে জেনে থাকি পল্লবী এবং প্রসেনজিৎ দুই ভাই বোন। তাঁরা দুজনেই টলি পাড়ার অত্যন্ত সুপরিচিত মুখ। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়কে তো বাংলার ইন্ডাস্ট্রি বলা হয়ে থাকে। অন্যদিকে আবার দীর্ঘদিন অভিনয় করেছেন পল্লবীও। কিন্তু সেই অর্থে এখন আর তাঁকে সিনেমার পর্দায় দেখা যায় না।
প্রসেনজিৎ-পল্লবী দুই ভাইবোন হলেও তাঁদের আরও একজন কিন্তু বোন রয়েছেন। না নিজের বোন নয়। একটা সময় টলিউডের অন্যতম সুদর্শন এবং প্রতিভাবান অভিনেতা ছিলেন অভিনেতা বিশ্বজিৎ চ্যাটার্জী। বাংলার পাশাপাশি হিন্দি সিনে দুনিয়াতেও দাপট দেখিয়েছিলেন এই অভিনেতা। আর এই অভিনেতারই দুইজন সন্তান হলেন প্রসেনজিৎ এবং পল্লবী।
প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের মা ছিলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। দুই সন্তানকে নিয়ে কলকাতায় থাকতেন তিনি। মুম্বাইতে বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ব্যস্ত বাবার জন্মদিন উদযাপন করতে মা দুই ছেলেমেয়েকে সঙ্গে নিয়ে যেতেন মুম্বাই। ১৯৬২ সালে তিনি হিন্দি চলচ্চিত্র বিশ সাল বাদ-এ অভিনয় করেন বিশ্বজিৎ। সেই সময় কিন্তু রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈবাহিক সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন বিশ্বজিৎ। কিন্তু মুম্বাইতে থাকার সময়ে বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের পরিচয় হয় ইরা দেবীর সঙ্গে। ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে আবদ্ধ হন তাঁরা।
আর এরপরেই জীবনের মোড় ঘোরানো সিদ্ধান্ত নেন বিশ্বজিৎ। স্ত্রী এবং ছোট ছোট দুই সন্তান প্রসেনজিৎ এবং পল্লবীকে ছেড়ে দিয়ে তিনি ইরাকে বিয়ে করেন। নিজের পরিবারকে ছেড়ে দিয়ে ইরাকে বিয়ে করার এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছিল। তার এই পদক্ষেপ একেবারেই ভালো চোখে মেনে নেয়নি কলকাতাবাসী। এরপর বিশ্বজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের যোগাযোগ কমে যায় কলকাতার সঙ্গে। পাকাপাকি তিনি মুম্বাইয়ের বাসিন্দা হয়ে যান।
ইরা দেবীর সঙ্গে সম্পর্কের ফলে বিশ্বজিৎ চ্যাটার্জীর একটি মেয়ে রয়েছেন সম্ভাবী। যদিও তিনি প্রাইমা চ্যাটার্জী নামেও পরিচিত। পল্লবী জানিয়েছিলেন ছোট বোনকে নিয়ে বা বাবার দ্বিতীয় বিয়েকে নিয়ে এখন তাঁদের মনে কোনও অভিমান নেই। সৎ দাদা এবং দিদির মতো অভিনয় জগতে পা রেখেছিলেন সম্ভাবীও। মাত্র ১৩ বছর বয়সে তিনি অভিনয় দুনিয়াতে পা রেখেছিলেন। বাবা বিশ্বজিতের হাত ধরেই অভিনয় দুনিয়াতে প্রবেশ ঘটেছিল সম্ভাবীর। বিশ্বজিৎ চাইতেন তাঁর কনিষ্ঠা কন্যাও যেন বড় তারকা হয়ে উঠতে পারেন। ‘আদরিণী’ ছবি দিয়ে অভিনয় দুনিয়ায় পা রেখেছিলেন তিনি।
কিন্তু না অভিনয় দুনিয়ায় নিজের প্রতিভার তেমন বিচ্ছুরণ ঘটাতে পারেনি সম্ভাবী। নিজের সৎ দাদা প্রসেনজিৎ কিংবা দিদি পল্লবীর ধারেকাছেও আসতে পারেননি তিনি। বর্তমানে অভিনয় দুনিয়া থেকে অনেকটা দূরে রয়েছেন সম্ভাবী। সেই অর্থে এখন আর তাঁর দেখাও মেলে না।