মাত্র ৫৩ বছরেই নিভেছে জীবন প্রদীপ। জীবন যুদ্ধে হার মেনে তারাদের দেশে পা রেখেছেন টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীলা মজুমদার (Shirla Majumdar)। লম্বা অভিনয় কেরিয়ারে তিনি একের পর এক অসাধারণ কাজ উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। নানা চরিত্র, নানান দৃশ্যপটে তিনি উপস্থিত হয়েছেন প্রতিবার নতুন ভূমিকায়। এহেন দাপুটে অভিনেত্রী শ্রীলা মজুমদার নিজের শরীরে বহন করে চলছিলেন কঠিন কর্কট রোগ। মৃত্যুসজ্জায় শুয়ে স্বামীর কাছে বলেছিলেন জীবনের শেষ ইচ্ছা।
মাত্র ষোলো বছর বয়সে মৃণাল সেনের হাত ধরে তাঁর অভিনয় জীবনে পা রাখা। নাটকের মহড়া থেকে জহুরি মৃণাল সেনের চোখে পড়ে ‘শ্রীলা রত্ন’।১৯৮০ সালের প্রথম মৃণাল সেনের ছবিতে কাজ করেন অভিনেত্রী। পা রাখেন বড়পর্দায়। স্বর্ণযুগের শিল্পী তিনি। গত ২৭ ডিসেম্বর অভিনেত্রীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ টলিউড। অভিনেত্রীর জরায়ুতে বাসা বেঁধেছিল ক্যানসার। তবে জীবনের শেষ সময়েও শক্ত ছিলেন অভিনেত্রী। স্বপ্ন দেখতেন আরও দূরের আকাশ ছোঁয়ার।
প্রায় সাড়ে তিন বছর ভুগেছিলেন ক্যান্সারে। তবে সংবাদ মাধ্যমের কাছে এ প্রসঙ্গে মুখ খোলেননি। মৃত অভিনেত্রী শ্রীলা মজুমদারের স্বামী বলছেন, মৃত্যুর আগে নাকি ইউরোপ যাওয়ার স্বপ্ন দেখতেন নায়িকা। তিনিই নিজের অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে আনতে চাননি।
অভিনেত্রীর স্বামীর কথায়, নিজের অসুস্থতার খবর প্রকাশ্যে না আনার সিদ্ধান্ত ছিল শ্রীলার। তিনি কাউকেই নিজের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে বলতে চাননি। তিনি আরও বলেন, এর আগেও কঠিন অসুস্থতাকে হারিয়েছেন শ্রীলা। তাঁর বিশ্বাস ছিল এবারেও তিনি পারবেন আবারও জীবনের মূল স্রোতে ফিরে আসতে। কিন্তু তা আর হলো না। জীবনের শেষ কয়েকদিন হাসপাতালে থাকার সময় ইউরোপ যাওয়ার প্ল্যান করেছিলেন শ্রীলা। ঠিক হয়েছিল, স্বামী-স্ত্রী তাঁদের সন্তানকে নিয়ে ইউরোপ সফরে যাবেন।
নামকরা শিল্পীদের সঙ্গে এক স্ক্রিনে কাছ করেছেন অভিনেত্রী। তালিকায় রয়েছেন নাসিরউদ্দিন শাহ,স্মিতা পাটেল, শাবানা আজমির মতো শিল্পীরাও। কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি ‘পালান’ অভিনেত্রীর শেষ কাজ। মৃত্যুর আগে কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল অভিনেত্রীর। তবে টালিগঞ্জের বাড়িতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বর্ষীয়ান অভিনেত্রী শ্রীলা মজুমদার তাঁর কাজের মাধ্যমে রয়ে যাবেন সকলের মনে। বাংলা চলচ্চিত্র জগতে তাঁর অবদান সত্যিই চিরস্মরণীয়।