টলিউডে এই মুহূর্তে তিনি অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেত্রী আবার নিজের স্পষ্ট মতামতের জন্য রাজনৈতিক মহলেও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু তিনি। কথা হচ্ছে, অভিনেত্রী ‘সোহিনী সরকার’কে (Sohini Sarkar) নিয়ে। সদ্যই মুক্তি পেয়েছে তাঁর নতুন ছবি ‘রান্না বাটি’ (Ranna Baati)। এই ছবিতে সোহিনী একজন রান্নার শিক্ষিকা, যিনি এক স্ত্রী হারা স্বামী তথা এক কন্যা সন্তানের বাবাকে রান্না শিখতে পারদর্শী করে তুলবেন। এই মুহূর্তে প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি ভালই সাড়া পাচ্ছে দর্শকদের কাছ থেকে।
এই ছবির নিয়ে এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রীকে প্রশ্ন করা হয়– রান্না বাটি কি শুধুই মেয়েদেরই খেলা, এই চিন্তাধারার সঙ্গে আপনি ঠিক কতটা সহমত? উত্তরে অভিনেত্রী বলেন, “কথাটা যে অস্বীকার করা যায়, তেমনটা নয়। কিন্তু একটা সময় পর্যন্ত সমাজে এই ধারণাটা প্রচলিত ছিল অনেক বেশি, বর্তমানে কিছুটা হলেও কমেছে সেটা। এখন অনেক ছেলেরাও আছে যারা এইসব খেলা খেলতে চায়। তবে, ছেলেরা এসব খেলা খুব একটা জানে না। তাই সঙ্গী হিসেবে কোনও মেয়ে বন্ধু বা দিদি-বোন থাকলে তবেই খেলতে পারে।
এখন দ্রুত গতিতে যুগের পরিবর্তন হচ্ছে, প্রজন্মের পরিবর্তন হচ্ছে তাই চিন্তা ধারাতেও বিস্তর পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু যেই বিষয়টা আমার খুবই খারাপ লাগে যে, আজও মেয়েদের নিজেকে কোনও না কোনও জায়গায় প্রমাণ করতে হয়। কোনও সাফল্য অর্জিত হলে চারপাশে উচ্ছ্বাস দেখা যায়, কিন্তু একই পরিস্থিতিতে ব্যর্থতা এলে প্রশ্ন ওঠে নারীর দক্ষতা বা সামর্থ্য নিয়ে—এমনটাই বাস্তবতা। উদাহরণ হিসেবে ধরা যায় এই বিশ্বকাপ, জিতেছে বলে এত কদর আর হেরে গেলেই তখন কটাক্ষ জুটত।”
সোহিনী আরও যোগ করলেন, “বাইরের জগতে যারা কাজ করেন, তাঁরা সমাজে স্বীকৃতি পান, কিন্তু ঘরের ভেতরের কাজ, বিশেষ করে রান্না, সেটাও তো এক অসাধারণ শিল্প! রান্না মানে শুধু দৈনন্দিন প্রয়োজন নয়, এটি সৃজনশীলতার প্রকাশও বটে। যে কেউ রান্না করতে পারে না! রান্নাটা সময়, মনোযোগ এবং ভালোবাসার কাজ। আসলে রান্না এমন একটি দক্ষতা, যা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবার জানা উচিত। অনেক পুরুষই এখন চমৎকার রান্না করেন। অনেকে তাঁদের পরিবারের বা বন্ধুদের মধ্যে বিশেষভাবে জনপ্রিয়ও হয়েছেন সেই গুণে।
আরও পড়ুনঃ গুরুতর অসুস্থ হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন হাসপাতালে! শিগগিরই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন অভিনেতা জীতু কমল! শুরু শুটিং ফ্লোরে ফেরার প্রস্তুতি
বন্ধুবান্ধবদের বাড়িতে গেলে অনেক সময় দেখা যায়, কাকুরাই এমনসব রান্না করেন যার স্বাদ জিভে লেগে থাকে অনেক দিন। তাই যদি প্রত্যেকে অন্তত নিজের জন্য রান্না করতে শেখে, তবে জীবনের অনেক ঝামেলা কমে যায়। রান্না জানা মানে আত্মনির্ভর হওয়া, আর যারা সত্যিকারের এই শিল্পকে ভালোবাসে, তারা যেন ক্রমে নিজেদের দক্ষতাকে আরও বাড়িয়ে তোলে, যার মধ্য দিয়েই জীবনের স্বাদ আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে। আজকের যুগে দাঁড়িয়ে ছেলেদের এটা মাথা দিয়ে বের করে ফেলা উচিত, রান্না শুধু মেয়েরাই করে!”
