জি বাংলার ধারাবাহিক ‘কুসুম’ (Kusum) প্রথম দিকে দর্শকদের মন জয় করেছিল কুসুমের সহজ-সরল জীবন যাপনের ধরন এবং স্বপ্ন দেখা এক গ্রামের মেয়ের গল্প দিয়ে। কিন্তু এখন কথা হচ্ছে অন্য বিষয় নিয়ে। সাম্প্রতিক পর্বগুলোতে গল্পের গতি যতটা পরিবর্তন হয়েছে, তার চেয়ে বড় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে গাঙ্গুলী বাড়ির পরিবেশে। শুরুতে যে বাড়িটাকে বিশাল অভিজাত বাড়ি হিসেবে দেখানো হয়েছিল আর যেখানে অসংখ্য কর্মচারী যাতায়াত করত, এখন সেখানে চোখে পড়ে মাত্র দু-একজনকে! ফলে দর্শকদের মধ্যে প্রশ্ন উঠছে, বাকিরা সকলেই হঠাৎ কোথায় গেল?
দর্শকদের বড় অংশের মতে, গল্পের নানা নাটকীয়তা একদিকে থাক কিন্তু এত বড় বাড়িতে কেবল কুসুমকেই সারাক্ষণ কাজ করতে দেখা যাওয়া বেশ অস্বাভাবিক। বিশেষ করে যখন গল্পের শুরুর দিকে স্পষ্ট বলা হয়েছিল গাঙ্গুলী পরিবার ঐতিহ্যশালী, সমৃদ্ধ এবং সবসময় অনেকে তাদের কাজে সাহায্য করে। সেই তুলনায় এখনকার পর্বে বাড়ির যত কাজকর্ম, রান্না থেকে শুরু করে সাজানো, সবই যেন কুসুমের একার দায়িত্ব। তাই সমাজ মাধ্যমে বহুজনই মজা করে লিখছেন, “ইন্দ্রাণী গাঙ্গুলী কি বাকিদের চিরদিনের জন্য ছুটিতে পাঠিয়ে দিয়েছেন, কুসুমের ক্ষমতা দেখে?’
প্রসঙ্গত, গল্পের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা কুসুম-আয়ুষ্মানের ভুল বোঝাবুঝির ঘটনাটাও দর্শকদের মনে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। একটি বিজ্ঞাপন জন্য অভিনয় করতে গিয়ে আয়ুষ্মান সিঁদুর পরানোর দৃশ্যটি কুসুম সত্যি বলে ধরে নেয়। আয়ুষ্মান যতই বোঝানোর চেষ্টা করে, কুসুমের মন বিশ্বাস করতেই চায় না। এই আচরণকে অনেক দর্শক অস্বাভাবিক মনে করলেও, সেটাকে গল্পের অংশ ধরেই এগিয়ে যাচ্ছে ধারাবাহিক। তবে, গল্পে বাড়ির কর্মচারীদের রহস্যজনক অনুপস্থিতি এখন আরও বড় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠছে।
ইন্দ্রাণী গাঙ্গুলীর চরিত্র শুরুতে কুসুমকে খুব একটা পছন্দ করত না, কিন্তু সময়ের সঙ্গে সে নরম হয়েছে আর এই পরিবর্তন দর্শকদের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্য লেগেছে। কিন্তু গ্রহণযোগ্য নয় সেই বাস্তবতা, যেখানে বড় বাড়িতে কাজকর্ম একজনই করছে মুখবুজে। কুসুম আর হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া এই বাড়িতে আর কে কাজ করে কিংবা আদৌ কেউ আছে কি না, সেই প্রশ্নের উত্তর ধারাবাহিক দিচ্ছে না। অনেকেই বলছেন, গল্পের উত্তেজনা বাড়াতে গিয়ে বাস্তবতার অংশটাই যেন গায়েব হয়ে গেছে।
আরও পড়ুনঃ ‘বিশৃ’ঙ্খলার মাঝেও শান্তির ঠিকানা’, রহস্যময় হতে চুম্ব’নের ছবিতে নতুন প্রেমের ইঙ্গিত সৌমি চক্রবর্তীর! গুঞ্জন কি তবে সত্যি হতে চলেছে? পর্দার মন্দার, দেবজ্যোতি কি তবে বাস্তবেও রোহিনীর কাছের মানুষ?
এখন দর্শকদের অসন্তোষের বড় কারণ এখন শুধুই কুসুমের মানসিক জেদ না বরং পরিবেশগত অসঙ্গতি। একটি বড় পরিবারকে বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে যেমন প্রয়োজন গল্প, চরিত্র, সম্পর্ক। তেমনই প্রয়োজন সেই পরিবারের দৈনন্দিন চলনের বাস্তব উপস্থিতি আর সেই জায়গাতেই ধারাবাহিকটি বর্তমানে সমালোচনার মুখে। গল্প যেদিকেই এগোক, দর্শকের চাওয়া যেন অন্তত অভিজাত পরিবারকে তেমনই দেখানো হয়, যেমনটা বলা হয়েছিল শুরুতে। না হলে, দর্শকদের ঠকানো হবে।
