বাংলা এখন উত্তপ্ত। সিটি অফ জয়ের (City of Joy) নামে খ্যাত শহর কলকাতা (Kolkata) এখন যেন অপরাধের আঁতুরঘর। খাস কলকাতার বুকে এক নাম করা সরকারি হাসপাতালে এক মহিলা চিকিৎসকের ওপর ঘটে যাওয়া নারকীয় ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় এখন উত্তপ্ত বাংলা। অপরাধীর শাস্তি দাবিতে এখন উন্মত্ত জনগণ। আর তারই মাঝে ফের ঘটলো আরও একটি ভয়ঙ্কর ঘটনা।
অত্যন্ত সভ্য, মার্জিত, শান্ত বাঙালি জাতি কবে এতটা হিংসাত্মক হয়ে উঠলো? কথায় কথায় মানুষকে মেরে ফেলার মতো ঔদ্ধত্য এই জাতির মধ্যে কবে জন্ম নিল? শহর যে বদলে গেছে, জাতির মন মানসিকতা যে বদলে গেছে তার প্রমাণ ফের মিলল। এদিন এই শহরে ভরদুপুরে একদল লোকের হাতে আক্রান্ত হলেন গায়ক দুর্নিবার সাহা ও তার স্ত্রী তথা অভিনেতা প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের আপ্ত সহায়ক ঐন্দ্রিলা সেন। উল্লেখ্য, এই ঘটনাটি ঘটেছে নাকতলার ভিতরে ৯৯ নম্বর ওয়ার্ডে। অঞ্চলটি নেতাজিনগর থানার অধীনস্থ।
ঘটনা কি? ফেসবুক ভিডিও তে দুর্নিবার জানিয়েছেন, নিজেদের পোষ্যকে স্নান করানোর উদ্দেশ্যে সারমেয় কেন্দ্রে যাচ্ছিলেন দুজনে। তারা যে রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন, সেখানে সেই সময় পিচের কাজ হচ্ছিল। গায়কের অভিযোগ অনুযায়ী সেই সময় রাস্তায় কোনও রকম স্টপ লেখা বোর্ড বা কোনও গার্ড দেওয়া ছিল না। ওই মানুষগুলোকে সরে যাওয়ার জন্য বার বার হর্ন বাজাতে থাকেন দুর্নিবার। কিন্তু তারা তো সরেননি, উল্টে আক্রমণ করেন।
তারা গায়ক আর তার স্ত্রীর উদ্দেশ্যে প্ররোচনামূলক কথা বলতে থাকে। প্রতিবাদে গাড়ি থেকে নামেন দুর্নিবার। এরপর তাকে আক্রমণ করে ওই একদল জনতা। গলায় আঁচড়ের দাগ দেখিয়ে দুর্নিবার বলেন ওরা গলা চেপে ধরেছিলেন। আমি এখনও ঢোঁক গিলতে পারছি না। গলায় ব্যথা। হাত খিমচে দিয়েছে, ছাল তুলে নিয়েছে। দুর্নিবার ওই ভিডিওতে জানিয়েছেন, ‘নিজেকে বাঁচানোর জন্য হামলাকারীদের এক জনের গলা আমিও চেপে ধরি। ওরা তখন তিন চার জন মিলে রাস্তার উল্টো দিকে আমাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যান, এমনকি গাছের ডাল নিয়েও আমাকে মারতে আসেন।’ দুর্নিবারকে এমন পরিস্থিতিতে দেখে গাড়ি থেকে নেমে পড়েন ঐন্দ্রিলাও।
আরও পড়ুনঃ “এটা জল শঙ্খ রে পাগলি, এটা ফু দিয়ে ফুটো করে দিলেও আওয়াজ হবে না…” সমাজমাধ্যমে ভিডিও শেয়ার করে চরম ট্রোল ঋতুপর্ণা
ভিডিওতে দুর্নিবার জানিয়েছেন, ‘মোহর (ঐন্দ্রিলার ডাক নাম) গাড়ি থেকে নেমে খুব সাহসের সঙ্গে বলে, ‘সাহস থাকলে আমার গায় হাত দিয়ে দেখান’। পুরুষরা গায়ে হাত না দিলেও ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক মহিলা মোহরকে দু’বার ধাক্কা দেন। মোহরেরও হাতে ব্যথা লেগেছে। যদিও এই ঘটনায় কিছু ভালো মানুষ যে এখনও রয়েছে তার প্রমাণ তারা পেয়েছেন বলেও উল্লেখ করেছেন ঐন্দ্রিলা। একইসঙ্গে তার প্রশ্ন এই সমাজে কি রাত, দিন কোনও সময়ই মানুষ সুরক্ষিত নয়? তাহলে কি সবাই সবকিছু ছেড়ে বাড়িতে বসে থাকবে? ইতিমধ্যেই নেতাজি নগর থানায় অভিযোগ জানিয়েছেন গায়ক।