বাংলা ধারাবাহিকের জগতে ‘পায়েল দে’ (Payel De) নামটাই যথেষ্ট। অভিনয়ের জোরে দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ইন্ডাস্ট্রিতে নিজের অবস্থান পাকা করেছেন তিনি। ‘দুর্গা’ (Durga) কিংবা ‘বেহুলা’ (Behula) —এই দুটি ঐতিহাসিক চরিত্রে তার অভিনয় এখনও দর্শকদের মনে গেঁথে রয়েছে। তবে শুরুটা তার জন্য সহজ ছিল না। গুণমুগ্ধ অভিনয় থাকা সত্ত্বেও প্রাথমিক পর্বে প্রাপ্য কদর পাননি অভিনেত্রী।
তবু নিজের চেষ্টা ছাড়েননি তিনি। আর তারই ফল হিসেবে ‘দেশের মাটি’ ধারাবাহিকের ‘উজ্জয়িনী’ চরিত্রটি তার কেরিয়ারের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। বর্তমানে পায়েল অভিনয় করছেন ‘কোন সে আলোর স্বপ্ন নিয়ে’ (Kon Se Aalor Swapno Niye) ধারাবাহিকে। ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দা—সবখানেই নিজের ছাপ রেখেছেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনকেও সমান গুরুত্ব দিয়েছেন।

জীবনসঙ্গী অভিনেতা ‘দ্বৈপায়ন দাস’ (Dwaipayan Das) এর সঙ্গে তাঁর প্রেম, তারপর বিয়ে—সবকিছুই ছিল এক সুন্দর গল্পের মতো। দীর্ঘ এক যুগের দাম্পত্য জীবন পেরিয়ে আজও তাদের সম্পর্ক যথেষ্ট দৃঢ়। ৩ ফেব্রুয়ারি ছিল তাঁদের বিবাহিত জীবনের একযুগ পার হওয়ার বর্ষপূর্তি, যেটা তাঁরা উদযাপন করেছেন নিজেদের মতো করেই। তবে এই পথটা সবসময় এমন মসৃণ ছিল না।
পায়েল নিজেই জানিয়েছেন, বিয়ের আগে ইন্ডাস্ট্রিরই এক সহকর্মী তাকে সাবধান করেছিলেন—নাকি একই পেশার মানুষকে বিয়ে করলে সম্পর্ক টেকে না। রেষারেষি, পেশাদার ঈর্ষা—সবই নাকি মাঝখানে চলে আসে। কিন্তু পায়েলের বিশ্বাস ছিল নিজের সিদ্ধান্তে। আর এখন তিনি খোলাখুলি বলছেন, “একই পেশায় থাকা আমার কাছে কোনও অভিশাপ নয়, বরং আশীর্বাদ, সেটা এখন বুঝি।
আমরা একে অপরের সমস্যাগুলো বুঝতে পারি, কারণ আমরা একই জগতে কাজ করি।” এই সম্পর্কের ভিতটা শুধু ভালোবাসা নয়, বরং বোঝাপড়া আর বন্ধুত্বে গাঁথা। পায়েল বলেন, দ্বৈপায়ন তার স্বামীর চেয়েও আগে একজন ভালো বন্ধু। তাই রাত করে বাড়ি ফেরা, শুটিংয়ের চাপ, মানসিক ক্লান্তি—এই সবই তারা ভাগ করে নিতে পারেন। তাদের ছেলে মেরখ-কে নিয়েও ভরা সংসার।
আরও পড়ুনঃ শেষমেশ জেঠিমণির হাতেই বিচার! রুদ্ররূপের বিরুদ্ধে ফুলকির যুদ্ধ পেল রোমহর্ষক সমাপ্তি! ‘ফুলকি’তে আসছে রুদ্ধশ্বাস সাত দিন!
এই পরিবারই তাঁর শান্তির জায়গা। আজ যখন পায়েলের দিকে তাকানো হয়, তখন বোঝা যায় তিনি শুধু একজন সফল অভিনেত্রীই নন, তিনি একজন সচেতন স্ত্রী, মায়া মমতায় ভরা মা এবং নিজের জীবন নিয়ে সন্তুষ্ট একজন নারী। আর তার এই গল্প একটাই শিক্ষা দেয়—যদি আত্মবিশ্বাস থাকে, ভালোবাসা থাকে, তবে বাইরের সন্দেহ কিংবা অপমান কোনও কিছুই দমাতে পারে না!