বাংলা টেলিভিশনের জনপ্রিয় অভিনেত্রী ‘স্নেহা চ্যাটার্জী’ (Sneha Chatterjee) নিয়মিত দর্শকদের কাছে এক পছন্দের নাম। বর্তমানে তিনি অভিনয় করছেন স্টার জলসার ‘রাজরাজেশ্বরী রানী ভবানী’তে এক বিধবার চরিত্রে। এর আগে একের পর এক ধারাবাহিকে ভিলেন হোক বা ইতিবাচক চরিত্র, তাঁর অভিনয়ের দক্ষতা দর্শকের মনে আলাদা ছাপ ফেলেছে। মূল চরিত্রে না থেকেও পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করে যে তিনি আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন, তা অস্বীকার করার উপায় নেই। তবে এই জায়গায় পৌঁছনোর পথ মোটেও সহজ ছিল না।
লড়াই, পরিশ্রম আর অদম্য ইচ্ছাশক্তির জোরেই আজ তিনি দর্শকের প্রিয়। আর এই পথ চলার প্রতিটি ধাপে তাঁর শক্তি হয়ে পাশে থেকেছেন বাবা-মা। কিছুদিন আগে এক রিয়েলিটি শো-তে এসে স্নেহা নিজের পারিবারিক জীবনের কিছু অজানা কথা খোলাখুলি ভাগ করে নিয়েছেন। সেখানে তিনি বলেন, তাঁর জীবনের প্রথম বন্ধু ছিলেন তাঁর বাবা। ছোটবেলায় যত দুষ্টুমি করেছেন, তার সবটাই বাবাকে জানিয়ে করেছেন নির্দ্বিধায়। শুধু তাই নয়, জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোতেও বাবাকে প্রথমে বিশ্বাস করেছেন।
এমনকি যখন জীবনে বিশেষ একজনের আগমন ঘটেছিল, তখনও কারও আগে বাবাকেই জানিয়েছিলেন। বাবার স্নেহ, বোঝাপড়া আর সমর্থনই তাঁকে মানসিকভাবে শক্ত করেছে। অন্যদিকে, মা ছিলেন একেবারেই ভিন্ন স্বভাবের। স্নেহার কথায়, তাঁর মা ছিলেন যেন বাড়ির যমদূত! একবার নাম ধরে ডাকলেই পাড়া কাঁপিয়ে সেই আওয়াজ পৌঁছে যেত দূর পর্যন্ত। ছোটবেলায় মায়ের কাছ থেকে প্রচুর বকুনি, এমনকি মারও খেতে হয়েছে তাঁকে। তবু সেই কঠোরতার মধ্যেই ছিল জীবন পাঠ শেখানোর এক অদৃশ্য মমতা।
মা-ই তাঁকে বুঝিয়েছেন সংসার গুছিয়ে রাখার গুরুত্ব, আর বাইরে ও ভেতরের দায়িত্ব কীভাবে একসাথে সামলাতে হয়। স্নেহা বলেন, বাবার স্নেহ যেখানে তাঁকে মনের দিক থেকে দৃঢ় করেছে, মায়ের কঠোর শাসন তাঁকে বাস্তব জীবনে টিকে থাকার শিক্ষা দিয়েছে। তিনি মনে করেন, এই দুই বিপরীতধর্মী প্রভাবই তাঁর চরিত্র গঠনে মুখ্য ভূমিকা রেখেছে। আজ অভিনয়জগতে তিনি যে নিজের জায়গা তৈরি করতে পেরেছেন, তার কৃতিত্ব সমানভাবে বাবার নিরন্তর উৎসাহ ও মায়ের কঠোর শিক্ষাকেই দেন।
আরও পড়ুনঃ স্বপ্নের মতো প্রেমের স্বীকৃতি, আকাশে ভেসে উঠল আর্যের ভালোবাসার স্বীকারোক্তি! রাজলক্ষ্মীর সঙ্গে খুশিতে নাচল আর্য, অপর্ণার মা জেনে গেল আর্যর সঙ্গে সম্পর্কের কথা! গোপনে মীরার ক্যামেরায় বন্দি হলো আর্য-অপর্ণার মধুর মুহূর্ত, সামনে কি বড় ঝড়?
অভিনেত্রীর এই অকপট স্বীকারোক্তি দর্শকদের মনে যেন আলাদা ছাপ ফেলেছে। অনেকেই বলেছেন, স্নেহার সাফল্যের পিছনে যে পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে, তা তাঁর কথায় স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আজ যখন তিনি টেলিভিশনের ব্যস্ততম অভিনেত্রীদের একজন, তখনও তিনি গর্বের সঙ্গে মেনে নেন যে নিজের জীবনের বড় শিক্ষা তিনি বাড়ি থেকেই পেয়েছেন। আজ তিনি কারোর স্ত্রী এবং একজন মা, নিজেও চান যেন সন্তান শক্তিশালী এবং সংবেদনশীল একজন মানুষ হিসেবে বড় হয়।