জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘ফুলকি’ (Phulki) শেষ হওয়ার খবরে দর্শকদের মধ্যে বেশ মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। কেউ আক্ষেপ করছেন যে ১০০০ পর্বের আগে এত জনপ্রিয় ধারাবহিককে বন্ধ করে দেওয়া উচিত হয়নি। আবার অন্যজনের কথায়, গল্পের কোনও মানে দাঁড়াচ্ছে না আজকাল। তাই সন্মান নিয়ে শেষ হওয়াই ভালো। তবে, এই ধারাবাহিকের দর্শকরা বলছেন, প্রধান চরিত্র ফুলকিকে যতটা না মনে পড়বে, তারা থেকে বেশি নেতিবাচক চরিত্র ‘রুদ্র’কে ভীষণভাবে মিস করতে চলেছেন!
ধারাবাহিকের মূল কাহিনি বা চরিত্রে যত বদলই আসুক, রুদ্রর উপস্থিতি পর্দায় একটা আলাদা উত্তেজনা তৈরি করত। তার সংলাপ বলার ধরণ, শরীরী ভাষা আর অভিব্যক্তির তীক্ষ্ণতা মিলিয়ে চরিত্রটা এমনভাবে দাঁড়িয়ে গিয়েছিল যে দর্শকের চোখ স্বভাবতই তার দিকে টেনে নিত। অনেকের মতে, ফুলকির জনপ্রিয়তার পেছনে রুদ্রর অবদান কম নয়। নায়িকা মতোই সমান গুরুত্ব নিয়ে সে পুরো গল্পটা বহন করেছে প্রায় নয়শো পর্ব ধরে!
সাধারণত নেতিবাচক চরিত্রকে দর্শকেরা অপছন্দ করলেও রুদ্রর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা ছিল সম্পূর্ণ উল্টো, তার দৃশ্য এলে দর্শক চ্যানেল পাল্টাতে চাইতেন না। এটা সুদীপ সরকারের অভিনয়শক্তিরই বড় পরীক্ষা ও বড় সাফল্য। দর্শকের এই ভালোবাসা থেকে এক জিনিস পরিষ্কার যে, একজন দক্ষ অভিনেতা নেতিবাচক চরিত্রকেও কতটা গভীরতা দিতে পারেন, রুদ্র তারই উদাহরণ। ভিলেন হলেও চরিত্রটা একঘেয়ে হয়নি কখনও, বরং মুহূর্তে মুহূর্তে বদলে গেছে তার তীব্রতা।
সুদীপ সরকার এমন ভাবে চরিত্রকে ধারণ করেছিলেন, যেন রুদ্রর প্রতিটি সিদ্ধান্তই বাস্তবের কোনও মানুষের মতোই বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়। এই স্বাভাবিকতাই তাকে আলাদা করে তুলেছিল। প্রসঙ্গত, ফুলকি দুই বছর টানা জনপ্রিয় থেকেছে। টিআরপি তালিকায় বারবার উপরে ওঠা, একাধিকবার বেঙ্গল টপার হওয়া, এসবই প্রমাণ করে দর্শকের আগ্রহ কতটা ছিল। আর এই সাফল্যের পেছনে দিব্যানি মণ্ডল ও সুদীপ সরকারের জুটি একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
আরও পড়ুনঃ “ইন্ডাস্ট্রিতে একমাত্র জিৎ জানে কিভাবে বন্ধুত্ব রাখতে হয়” — অকপট স্বীকারোক্তি অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা উপেন্দ্রর! কিসের ভিত্তিতে এত বছর পরেও এমন দৃঢ় বিশ্বাস অভিনেত্রীর? বন্ধুত্বের গভীরতা না কি টলিউডের অদেখা সম্পর্কের সমীকরণ—কোন সত্যি তুলে ধরতে চাইলেন অভিনেত্রী?
দুজনের পর্দার রসায়ন গল্পকে এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি দর্শকের মনে জায়গা করে নিয়েছিল খুব সহজেই। ধারাবাহিক শেষ হলেও দর্শকদের একটাই আশা যে, সুদীপ সরকারকে আবার নতুন রূপে, নতুন কোনও চরিত্রে, হয়তো আবারও কোন তুখোড় ভিলেন হিসেবে ফিরে দেখতে চান তাঁরা। কারণ অভিনয়ের দিক দিয়ে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন, শক্তিশালী প্রতিপক্ষ থাকলে কোনো গল্পই আরও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। তাই দর্শকেরা অপেক্ষা করছেন, এবার তিনি কোন চরিত্রে ফিরবেন।
