ঈদের দিনে মীরের বাড়িতে উৎসবের আমেজ। মীরের (Mir Afsar Ali) মায়ের হাতে তৈরি সেমাইয়ের পায়েস খেতে খেতে শুরু হল আড্ডা। সকাল ম্যান মীর সরি এখন তিনি গপ্পো মীর (Goppo Mir er Thek)। মীর অর্থাৎ যার পুরো নাম মীর আশরাফ আলী তিনি বলেন লোকে বলে “আমায় নাকি ঠিক ‘মুসলমান-মুসলমান’ মনে হয় না” সেই প্রসঙ্গে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন ধর্ম মানেই মন্দিরে গিয়েই পুজো করতে হবে বা মসজিদে গিয়েই নমাজ পড়তে হবে, এমনটা মীর মানেন না। তিনি প্রকৃতির মাঝে গিয়েও মানসিক ভাবে অন্য জায়গায় পৌঁছে যেতে পারেন।
মসজিদে গিয়ে ইমাম সাহেবের পিছনে বসে যখন নমাজ পড়েন, সেই সময় মুখে কোরান থেকে কী বলছি, তার চেয়ে বেশি জরুরি মনে হয় এত ভাইয়েরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, সময় বার করে ‘সাজদা’ করছেন— এই গোটা দৃশ্য দেখতে পাওয়া। এটা দেখতে মীর এর খুব ভাল লাগে। সে রকম ভাবে তিনি নমাজ পড়েন না। নিয়মিত মসজিদে যায়না। তিনি খুব দুঃ’খপ্রকাশ করে বলেন তাদের বাড়িতে ডোকরার দুর্গাপ্রতিমা আছে, সেটা কোনও কারণে ভিডিয়োর মাধ্যমে অনুরাগীদের নজরে আসে। ব্যস! ট্রো’লিং শুরু। মুসলমানের বাড়িতে দুর্গাপ্রতিমা কেন থাকবে? মানুষ সব ক্ষেত্রেই কথা বলবে। এড়িয়ে যাওয়ার মধ্যেই শান্তি। এ সব দেখা এখন ছেড়ে দিয়েছেন।
রেডিও কেনও ছাড়লেন? সকাল ম্যানকে প্রশ্ন করা হলে মীর একটু মর্মাহত হয়ে বলেন রেডিওতে পরিবর্তন। কোথাও মনে হচ্ছিল, একই পাঞ্জাবি গান ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বাজছে। বাংলা গান বাজবে না। ভিডিও আর রিল করতে করতেও তিন ক্লান্ত হয়ে পড়েছিল। তার মেয়ে তাকে বলে তার কি করা উচিৎ আর কি নয়। রেডিও যে দিন ছেড়েছিলেন,তার খুব খুব কা’ন্না পেয়েছিল। বুঝতে পারেন, এই সিদ্ধান্তের পরিণামের যে অভি’ঘাত বা চাবু’ক, তা সবচেয়ে বেশি নিজেকে আ’ঘাত দেবে। সহ্য করতে হবে।
কা’ন্না সামলেছেন কেমন করে? এই উত্তরে মীর বলেন পরিবার না থাকলে হত না। প্রত্যেক দিন যদি ভাবতে বসতেন, মাস গেলে সংসারে কত টাকা দিলে সংসার চলবে, আগে কী রোজগার করছেন, এখন কী রোজগার হচ্ছে… তা হলে কাজ করতে পাড়তেন না। মুশকিল হত। এই ভেবেই সকাল ম্যান মীর থেকে গপ্পো মীর হয়ে উঠেছেন।
টেলিভিশনের মুখ এখন রাজনীতিতে, ভোটে দাঁড়াবার প্রস্তাব পেয়েছেন? এই উত্তরে মজা করে বলেন না। “আমায় কেউ বলেনি, জানেন। আমি কিন্তু খুব চাই, কেউ প্রস্তাব দিক।” আমাদের গপ্পো মীর নিজের ইগোকে খুব ভয় পান। সেই মীর যিনি একদা ঋতুপর্ণ ঘোষের প্রশ্ন’বা’ণের মুখোমুখি হয়েছিলেন! আজ যদি আবার সেই পরিস্থিতির সামনে আসেন, কী পরিবর্তন নিজের মধ্যে দেখবেন?
উত্তরও দেন সুন্দর ভাবেই “তখন আমার কোনও ই’গো ছিল না। কান লাল হয়ে গিয়েছিল, ও রকম বকা তো আগে খাইনি! তবে ঋতুদাকে বোঝাতে চেয়েছিলাম, যা বলেছি মজা’র ছলে। ঋতুদা আ’ঘাত পেয়েছিলেন। ওঁর সঙ্গে কোনও লড়া’ই তো ছিল না! কিন্তু তিনি আমার শিক্ষক ছিলেন। আমি এ ভাবেই ওঁকে দেখতাম। কিন্তু ওই দিন কী যেন হল, আর ক্যামেরাও রোল করল! আজও এই নিয়ে মানুষ প্রশ্ন করেন। আগে অস্ব’স্তি হত। এখন বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি মোকা’বিলা”
স্বস্তিকা আর মীরের সম্পর্ক নিয়ে এক সময়ে নানা কথা উঠে সেই প্রসঙ্গে মীর বলেন “স্বস্তিকা আর আমার বহু দিনের বন্ধুত্ব। যা-ই হয়ে যাক, আমরা বন্ধু আছি, থাকবও। আরে এক ইন্ডাস্ট্রিতেই তো কাজ করি!” এবং শেষে গপ্পো মীর বলেন তিনি বৃদ্ধাশ্রমের মানুষকে গিয়ে গল্প শোনাতে চান। দৃষ্টিহীন বাচ্চাদের গল্প শোনাতে চান। মানুষ বড্ড একা। তিনি তাদের পাশে দাঁড়াতে চান।