জি বাংলার ধারাবাহিক ‘জোয়ার ভাঁটা’র (Jowar Bhanta) গল্প এখন এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে দুই বোনের সম্পর্ক ঠিক কোন দিকে যাবে তা বোঝাই যাচ্ছে না। যাকে শত্রু ভেবে এতদিন পরিকল্পনা করে এসেছে নিশা, সেই ঋষিকে অপহরণ করার পর থেকেই পরিস্থিতি আরও বেশি জটিল হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেও উজির দিদির প্রতি টানটা আলাদা করে চোখে পড়ছে। চূড়ান্ত অপরাধ বুঝেও সে বারবার চেষ্টা করেছে নিশাকে বিপদ থেকে সরিয়ে আনতে। পুলিশের তৎপরতা, ঋষির পরিবারে আতঙ্ক, সবকিছুর মধ্যে উজি হয়তো একমাত্র ব্যক্তি যে দু’দিক সামলাতে চাইছে।
কিন্তু অপহরণের রাতটা এমনভাবে মোড় নেবে, সেটা কেউ কল্পনা করতে পারেনি। মুক্তিপণের টাকার বিনিময়ে ঋষিকে ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল নিশা আর ঠিক তখনই পুলিশ দলবেঁধে ঘিরে ফেলে। পরিস্থিতি যখন পুরোপুরি নিশার বিরুদ্ধে যাচ্ছে, তখন এক রহস্যময় বাইক এসে তাকে তুলে নিয়ে পালিয়ে যায়। নিশার ধারণাই ছিল না কে তাকে বাঁচালো, পরে জানতে পেরে থতমত খায় সে যে ওটা উজি! শান্তস্বভাব উজি এভাবে দিদিকে নিয়ে পালাবে, এটা ভাবাই কঠিন ছিল তার কাছে।
একদিকে মনে শান্তি নিয়ে ফিরে আসে উজি যে কারোর কোনও ক্ষতি হয়নি, কিন্তু বাড়ি ফিরেই দেখা যায় নিশার অন্য রূপ! দিদিকে বাঁচাতে সে প্রাণপণ চেষ্টা করলেও, নিশার আচরণ এতটাই পাল্টে গেছে যে উজির ভবিষ্যত সংকটে। ভানু যখন নিশাকে টাকার কথাটা জানতে চায়, সে বলে উজি তাকে টাকাটা আনতে দেয়নি। ভানু বলে, উজি বড়লোক শশুরবাড়ি আর এত সুখ দেখে তাদের বাবার প্রতিশোধের কথাটা ভুলে যাবে না তো! নিশার কথা না শুনে ওকেই পুলিশের হাতে তুলে দেবে না তো!
ভানুর প্রশ্নে নিশার রাগ যেন আরও বেড়ে ওঠে, টাকা না পাওয়ার দায় সে ঠেলে দেয় উজির ঘাড়ে। সুখী সংসার দেখছে বলে উজি নাকি বাবার প্রতিশোধ ভুলে যাচ্ছে, এমন অভিযোগও উঠে আসে নিশার তরফেও। আর সেই অভিযোগ থেকে নিশার মনে জন্মায় আরও কঠিন সংকল্প, প্রয়োজনে বোনের জীবনটা এলোমেলো করে দিতেও সে পিছপা হবে না! অন্যদিকে, ঋষির বাড়ি তখন পুরো অন্য পরিবেশ। সবার মনে স্বস্তি যে ছেলেটা সুস্থভাবে ফেরত এসেছে। নতুন করে ফুলশয্যার প্রস্তুতি চলছে জ্যোতি ও ঋষির জন্য।
জ্যোতি অর্থাৎ উজির মনও ধীরে ধীরে নরম হচ্ছে, ঋষির প্রতি একটা আলাদা অনুভূতি তৈরি হচ্ছে তার ভেতরে। কিন্তু সেই নরম মুহূর্তগুলোর ওপরে যেন অদৃশ্য একটা আতঙ্ক চেপে আছে, নিশার ভয়ঙ্কর পরিকল্পনার ছায়া আর পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কার। সত্যি বলতে, উজি নিজেও বুঝতে পারছে কিছু একটা বড় বিপদ এগিয়ে আসছে। এদিকে ঋষির মেশো বাইকের নম্বর উদ্ধার করেছে, বোঝাই যাচ্ছে সত্যিটা খুব শিগগিরই প্রকাশ পাবে আর সেই অবস্থাটা নিশা যেভাবে সামলাতে চাইছে, তা আরও ভয়ঙ্কর।
আরও পড়ুনঃ দিতিপ্রিয়ার অভিযোগে নড়েচড়ে বসল মহিলা কমিশন, ডাক পড়ল জিতুর! মহাবিপাকে ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’! এবার কী তবে চিরতরে বন্ধের পথে ধারাবাহিক?
বোনের নতুন জীবনের প্রথম রাতটাই নষ্ট করার মত চিন্তাও করছে সে! যা দেখে দর্শকরা বলছেন, ‘নিশার আচরণ যেন স্বাভাবিকতার সীমা ছাড়িয়ে গেছে! এ কেমন প্রতিশোধ যে দিদি অপরাধের পর অপরাধ করে যাবে আর বোন মুখ বুজে নিজের সর্বস্ব ভুলে তার সঙ্গে দেবে, তাঁকে উদ্ধার করবে!’ এখন প্রশ্ন একটাই, উজির কোমলতা আর ভালোবাসা কি এই সংকট থেকে তাকে বের করতে পারবে, নাকি দিদির অন্ধ প্রতিশোধই শেষ পর্যন্ত তাদের দু’জনের জীবনকে অন্যদিকে ঠেলে দেবে?
