নানান জল্পনা-কল্পনা, অভিযোগ-প্রত্যঅভিযোগ আর অস্থিরতার মধ্যেই জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘চিরদিনই তুমি যে আমার’ (Chirodini Tumi Je Amar) এখন পুরোপুরি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। কিছুদিন ধরেই ধারাবাহিকের মুখ্য চরিত্রদের নিয়ে যা যা শোনা যাচ্ছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতে দর্শকরাও ধীরে ধীরে অধৈর্য হয়ে উঠেছিলেন। ধারাবাহিকের সেটের ভেতরের অশান্তি শুধু অভিনেতা বা প্রযোজনা সংস্থায় সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং দর্শকদের প্রতিক্রিয়া আর সমাজ মাধ্যমের সমালোচনাতেই যেন এই ঘটনার চাপ আরও বেড়ে দিয়েছে।
এই সমস্যার মধ্যে প্রকাশ্যে আসে নায়ক জিতু কমলের অভিযোগ। তিনি বলেছিলেন, সহ-অভিনেত্রী দিতিপ্রিয়ার অসহযোগিতার কারণে তাঁর কাজের স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট হচ্ছিল। অসুস্থ থাকলে সহানুভূতি না পাওয়া থেকে শুরু করে, ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে আপত্তি– এসব অভিযোগ জিতুর বক্তব্যে তোলপাড় ফেলে। অন্যদিকে দিতিপ্রিয়া জানান, শুটিং ঠিকঠাকই চলছে। তিনি কোনও অতিরিক্ত সমস্যার কথা জানেন না। দুই বিপরীত অবস্থান পরিস্থিতিকে আরও জটিল হয় আর ধারাবাহিকের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
এত কিছু হওয়ার পরে প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফ একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আয়োজন করে। তিন ঘণ্টার সেই আলোচনায় উভয় পক্ষই উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু বৈঠক থেকে কোনও নিশ্চিত সিদ্ধান্ত বেরোয়নি। ধারাবাহিক চলবে কি চলবে না, নায়ক-নায়িকা বদল হবে কি না, একটাও উত্তর মিলল না! উল্টো দর্শকদের বিভ্রান্তি আরও বেড়েছে, কারণ সিরিয়ালপ্রেমীরা প্রত্যেকে নিজের পছন্দের পক্ষ বেছে নিয়ে তর্কে ব্যস্ত। কেউ বলছেন দিতিপ্রিয়ার দিকেই সমস্যা, আবার কেউ মনে করছেন জিতুর মন্তব্য অযথা বিতর্ক বাড়িয়েছে।
ঠিক এমনই অস্পষ্ট অবস্থার মাঝেই গতকাল নতুন যে খবরটা সামনে এসেছে, তা হলো ‘আর্য’ চরিত্রে আর দেখা যাবে না জিতু কমলকে। ভক্তরা এই খবরে যেমন অবাক, তেমনই নির্মাতাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে কটাক্ষের বন্যা সমাজ মাধ্যমে। আর ঠিক সেই সময়েই সবচেয়ে বেশি শোরগোল ফেলেছে আরেকটি নাম– রণজয় বিষ্ণু! ‘গুড্ডি’র অনুজ এবং ‘কোন গোপনে মন ভেসেছে’র অনিকেত হয়ে যিনি সকলের পরিচিত হয়ে উঠেছেন, তাঁরকেই নাকি ভাবা হচ্ছে নতুন আর্য হিসেবে! অভিনয়ে গভীরতা আর আবেগ ফুটিয়ে তোলায় রণজয় যে ইতিমধ্যেই নিজের জায়গা পাকা করেছেন, তা দর্শকেরাও মানেন।
আরও পড়ুনঃ “ঋষির মা-উজির বন্ডিংটাই সিরিয়ালের প্রাণ!” শ্বাশুড়ি-বউমার মিষ্টি বন্ধনে মুগ্ধ দর্শক, দু’জনের মানবিক সম্পর্কই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু! ‘জোয়ার ভাঁটা’য় প্রতিশোধের আগুন ছাপিয়ে শাশুড়ি-বউমার রসায়নেই কি বাড়ছে ধারাবাহিকের জনপ্রিয়তা?
তাই অনেকে মনে করছেন, নতুন আর্য হিসেবে তাঁকে অস্বাভাবিক লাগবে না। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, এই সিদ্ধান্ত সত্যিই কার্যকর হবে তো? রণজয়ই কি নিশ্চিতভাবে আসছেন নতুন আর্য হয়ে? নাকি আবারও কোনও মোড় অপেক্ষা করছে? প্রযোজনা সংস্থা এখনও মুখ খোলেনি এবং আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও আসেনি। তাই এখনই নিশ্চিত কিছু বলা কঠিন। সময়ই শেষ পর্যন্ত বলেবে, এই অস্থিরতার ভেতর থেকে ধারাবাহিক কীভাবে ছন্দে ফিরবে এবং সত্যিই কি রণজয় বিষ্ণু হচ্ছেন নতুন ‘আর্য’। আপনাদের কেমন লাগবে রণজয় বিষ্ণু নতুন নায়ক হলে, জানাতে ভুলবেন না কিন্তু!
