জি বাংলার নতুন ধারাবাহিক ‘তারে ধরি ধরি মনে করি’ (Tare Dhori Dhori Mone Kori) ঘিরে উত্তেজনা তুঙ্গে। তবে এবার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে গল্প বা প্রোমো নয়, বরং অভিনয়শিল্পীদের চরিত্রবিন্যাস। বাংলা ধারাবাহিকগুলিতে যে ‘খলচরিত্র’ প্রায় বাধ্যতামূলক হয়ে দাঁড়ায়, সেই প্রথা ভেঙে যেন একদম উল্টো পথে হাঁটতে চলেছে এই ধারাবাহিক! অভিনেত্রী রীতা দত্ত চক্রবর্তী থেকে অহনা দত্ত, মানসী সেনগুপ্ত, যাঁদের বহুদিন আমরা দেখেছি প্রধানত খলচরিত্রে, তাঁরা এখানে সবাই ইতিবাচক ভূমিকায়!
ফলে দর্শকদের একটাই প্রশ্ন, এ কি তবে প্রথম বাংলা ধারাবাহিক যেখানে কোনও ভিলেনই নেই? এদিকে, অভিনেত্রী রীতা দত্ত চক্রবর্তীর উপস্থিতি নিয়েই দর্শকের কৌতূহল আরও বেশি। কারণ এর আগেই জি বাংলার ‘কার কাছে কই মনের কথা’-তে শাশুড়ি মায়ের চরিত্রে তাঁর নেতিবাচক রূপ যেন ঘরে ঘরে বিতর্কের ঝড় তুলেছিল। আবার শেষের দিকে সেই চরিত্রেই তাঁর বদলে যাওয়া মন জিতে নিয়েছিল দর্শকের প্রশংসা। এবার ফের শাশুড়ির ভূমিকায় ফিরছেন তিনি, কিন্তু পুরোপুরি ইতিবাচকতায়।
যাঁরা জানেন রীতার অভিনয়ের পরিধি কতটা বড়, তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। অন্তত তাঁকে আবার কোনও ‘টক্সিক’ চরিত্রের দায় বইতে হচ্ছে না। প্রসঙ্গত, এই ধারাবাহিকের দ্বিতীয় প্রোমো প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই এক ধরনের আলাদা মেজাজ তৈরি হয়েছে দর্শকমহলে। নবদ্বীপ, বেনারস, বৃন্দাবনকে ঘিরে আধ্যাত্মিক আবহে তৈরি এই গল্পে পরিবারকে কেন্দ্র করে স্নেহ, সম্পর্ক আর ভক্তির রেশ। গোরা-রূপমঞ্জরীর যাত্রাপথে যত চরিত্রই দেখা গেল, তাদের কারও মধ্যেই নেই সেই চিরচেনা ‘ষড়যন্ত্র’ বা ‘চক্রান্ত’-এর টানাপোড়েন।
বরং সকলেই কোনও না কোনওভাবে গল্পটাকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করছে। এতগুলো চরিত্রকে ইতিবাচক করে ধরে রাখা, বাংলা টেলিভিশনের নিঃসন্দেহে সাহসী পদক্ষেপ। দর্শকের একটি বড় অংশ সমাজ মাধ্যমে লিখছেন, “বাংলা সিরিয়ালের নেগেটিভ চরিত্রের ভরসায় টিআরপি ওঠানামা দেখে ক্লান্ত। এবার যদি সত্যিই ভিলেন-ছাড়া গল্প হয়, তা হলে সেটাই হবে সবচেয়ে বড়ো চমক।” কেউ লিখছেন, “অভিনেতাদের ভালো দিকটা দেখানোর সুযোগ খুব কমই মেলে। এই সিরিয়াল সেটা বদলাতে পারে।”
আরও পড়ুনঃ তারে ধরি ধরির প্রোমোতে শাড়ির ফাঁক দিয়ে উঁকি দিল নায়িকার নাভি! শুরু ট্রোলিং! পল্লবীর পক্ষে সরব ভক্তরা
অর্থাৎ, দর্শক নতুনত্ব চাইছেন আর চ্যানেলও যেন এবার সেই দিকেই হাঁটছে। তবে এই পরীক্ষায় কতটা সফল হবে এই ধারাবাহিক? কোনও ভিলেন ছাড়া দীর্ঘদিন দর্শককে বেঁধে রাখা কি আদৌ সম্ভব? টেলিভিশনের নিয়ম বলছে, সংঘাত ছাড়া নাটক জমে না। কিন্তু ‘তারে ধরি ধরি মনে করি’ যেন সেই ধারণাকেই চ্যালেঞ্জ করছে। ইতিবাচক চরিত্র, আধ্যাত্মিক আবহ আর সম্পর্কের মানবিক টানাপড়েনের মিশেলে কি তৈরি হবে নতুন ধরনের বাংলা ধারাবাহিকের অধ্যায়? এখন শুধু সময়ই সেই উত্তর দেবে।
