বাংলা ছবির জগত বেশ কিছু বছর হল সাবালক হয়েছে। কর্মাশিয়াল সিনেমার সঙ্গে সঙ্গে আর্ট ফিল্মও কিন্তু জমিয়ে ব্যবসা করছে। একটা সময় ছিল যখন বাংলা ছবির জগতে দাপিয়ে বেড়িয়েছে কমার্শিয়াল সিনেমা। স্বামী কেন আসামী থেকে মায়ের আঁচল, সিনেমা গুলি দেখার জন্য দুপুর বেলায় হলের সামনে লম্বা লাইন পড়ত মা কাকিমাদের। তাদের আলোচনায় উঠে আসতো একজনের নাম, তাঁর এক একটা ডায়লগ গায়ে কাঁপুনি ধরিয়ে দিত। তাঁর নাম অনামিকা সাহা। বাংলা ছবির জগতে তাকে নব্বইয়ের দশক থেকে তার পরবর্তী বেশ কিছু বছরের সেরা খলনায়িকা বলা হয়ে থাকে।
আশার আলো ছবিতে তিনি প্রথম ব্রেক পান। ওই ছবির সহকারী পরিচালক বলে দেন যে এই অচেনা জায়গায় নিজের আইডেন্টিটি অচেনা কারোর কাছে কোনদিনও প্রকাশ না করতে।ফলে তাঁকে স্টুডিও পাড়ায় এক ভদ্রলোক একদিন নাম জিজ্ঞেস করায় তিনি কোনোভাবেই নাম বলছিলেন না। বিরক্ত হয়ে সেই ভদ্রলোক বলে বসেন, ‘তুমি কি অনামিকা?’ তখন তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ আমি অনামিকা।’ সেই থেকে ঊষা সাহা হয়ে গেলেন অনামিকা সাহা।
এরপর বিয়ে হয়ে গেলে শ্বশুর মশাই তাকে সাহসী চরিত্রে অভিনয় করতে বারণ করেন। অভিনেতা বোধিসত্ত্ব মজুমদারকে বিয়ে করেছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে শ্বশুরমশাইয়ের অনুমতি নিয়ে আকাশবাণীতে রেডিও নাটক করে তিনি প্রবল খ্যাতি অর্জন করেন। তার কন্ঠস্বর ছিল ভারী সুন্দর।
এছাড়াও তিনি আরেকটি কাজ করতেন। বোম্বে থেকে যত নায়িকা টলিউডের বাংলা সিনেমা করতো তাদের গলার বাংলা ডাবিং করতেন অনামিকা সাহা। জুহি চাওলা, নীলম সকলের গলার ডাবিং কিন্তু অনামিকা সাহাই করেছেন।
মাঝে অনেক বছর তাকে আমরা দেখতে পাইনি কিন্তু এখন ছোটপর্দায় ফিরেছেন অনামিকা সাহা।জি বাংলা লালকুঠি ধারাবাহিকে ঠাম্মির চরিত্রে অভিনয় করছেন অনামিকা এবং সেখানে তিনি পজিটিভ রোলেই রয়েছেন। তবে গতকাল তার একটি নাচের দৃশ্য দেখে চমকে গেলেন নেটিজেনরা। অনামিকার মেহেন্দিতে চকাচক গানে নাচলেন বর্ষীয়ান অভিনেত্রী অনামিকা সাহা। এই বয়সেও তার এনার্জি দেখে চমকে গেলেন নেটিজেনরা। এখনো যে অভিনয় কে তিনি কতটা সিরিয়াসলি নেন এটাই তার প্রমাণ।
View this post on Instagram