জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

“হতে পারে গ্রামের মেয়ে, পড়াশোনা জানে না…কিন্তু খুব চালাক এই ‘কুসুম’!” “রাতুলকে বিয়ে করবে কেন, ওর তো টাকা নেই!” “বড়লোক আয়ুষ্মানকে ফাঁদে ফেলেছে, আর ছাড়ে!”— কুসুমের সিদ্ধান্তে বিতর্ক, স্বার্থপর বলছেন দর্শক! চরিত্র নিয়ে ক্ষুব্ধ দর্শকরা বলছে নায়িকাই খলনায়িকা!

জি বাংলার ধারাবাহিক ‘কুসুম’ (Kusum) একদিকে যেমন আবেগঘন গল্পের জোড়ে দর্শকদের বেঁধে রাখছে, তেমনি নানা বিতর্কেও জড়িয়ে পড়েছে ধারাবাহিকটির মূল চরিত্র। সম্প্রতি একটি দৃশ্যকে কেন্দ্র করে দর্শকদের একাংশ ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন। বিজ্ঞাপনের জন্য করা একটি ‘নকল’ বিয়েকে কুসুম নিজের মনে ‘আসল’ বলে ধরে নেওয়ার পর, তার আচরণ ও সিদ্ধান্ত ঘিরে প্রশ্ন তুলছেন বহু দর্শক। বিজ্ঞাপনে আয়ুষ্মানের সঙ্গে মালাবদল ও সিঁদুরদানকে কুসুম এতটাই গুরুত্ব দিয়ে ফেলেছে, পরিবার থেকে ঠিক করা ‘রাতুল’-এর সঙ্গে বিয়ে সে মেনে নিতে রাজি হয় না।

এই মানসিক দ্বন্দ্ব থেকেই শুরু হয় সমস্যা। কুসুম ঠিক করে, সে রাতুলকে বিয়ে করবে না। এমনকি, রাতুলের দেওয়া আংটি যেন পরতে না হয়, সে জন্য নিজের আঙুলে ছুরি দিয়ে কেটে ক্ষত তৈরি করে! অনেকের কাছে এই সিদ্ধান্তটা ‘অত্যন্ত আবেগতাড়িত’ মনে হলেও, বহু দর্শক এই আচরণে বিরক্ত। তাঁদের মতে, কুসুমের চরিত্রে এত সংযমহীনতা কেন? একটি অভিনয়ের শুটিংকে সত্যি বিয়ে বলে ধরে নেওয়ার যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। একাংশ আবার বলছেন, এটা বাস্তবতার সঙ্গে মোটেই খাপ খায় না।

দর্শকদের মধ্যে কেউ কেউ আরও কড়া ভাষায় কুসুম চরিত্রকে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, রাতুল যেহেতু মধ্যবিত্ত এবং আয়ুষ্মানের মতো বড়লোক না, তাই কুসুম তাকে গ্রহণ করতে চাইছে না। অনেকে আবার প্রধান চরিত্রের অভিনয় ঘিরে হতাশা প্রকাশ করেছেন। “সবসময় কাঁদো-কাঁদো গলায় কথা বলে!” এমন প্রশ্নও উঠেছে সমাজ মাধ্যমে। কেউ কেউ তো সরাসরি বলেছেন, তনিষ্কার কণ্ঠস্বরের ভঙ্গি এত একঘেয়ে যে, চরিত্রের গভীরতা আর টানই তৈরি হয় না।

এতে করে সংলাপ যতই মজবুত হোক, উপস্থাপনায় যেন অনেকটাই খারাপ হচ্ছে। তবে অন্য একটি দিকও একেবারে ফেলে দেওয়ার মতো নয়। অনেক দর্শকের কাছেই কুসুম চরিত্রের এই একগুঁয়ে জেদ ও সম্পর্ককে গুরুত্ব দেওয়ার মানসিকতা পছন্দ হচ্ছে। সে গ্রামের মেয়ে হতে পারে, হয়তো খুব বেশি পড়াশোনা করেনি, তবুও নিজের অনুভূতির ওপর বিশ্বাস রাখছে। যেটা অনেকেই সাহসের দৃষ্টান্ত হিসেবেও দেখছেন। যদিও সাহস আর আবেগের সীমা কোথায় টানা উচিত-সেই জায়গা নিয়েই বিতর্কটা দানা বেঁধেছে বেশি।

সব মিলিয়ে ‘কুসুম’ ধারাবাহিক এখন যেন একটা টানাপোড়েনের পর্যায়ে পৌঁছেছে। একদিকে চরিত্রের আবেগপ্রবণতা ও মানসিক টানাপোড়েন দর্শকদের মধ্যে কৌতূহল তৈরি করছে, আবার অন্যদিকে গল্পের অসংলগ্ন দিক আর চরিত্রের অতিরঞ্জিত আচরণ খারাপ লাগছে অনেক দর্শকের। তবে এটা অস্বীকার করা যায় না যে, ধারাবাহিকটি এখন দর্শকমনে জায়গা করে নিতে পেরেছে-হোক তা ভালো লাগা দিয়ে, কিংবা বিরক্তি দিয়ে।

Piya Chanda