পর্দায় তাঁকে কখনও দেখা যায় খলনায়কের ভূমিকায়, কখনও বা একেবারে সংবেদনশীল চরিত্রে—এই বৈচিত্র্যই তাঁকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তুলেছে। টলিউডে ‘সাগ্নিক চট্টোপাধ্যায়’ (Sagnik Chatterjee) এমন একজন অভিনেতা, যিনি চরিত্রের গভীরে ডুবে গিয়ে দর্শকদের একসঙ্গে ঘৃণাও কুড়িয়েছেন, আবার ভালোবাসাও। তবে পর্দার বাইরের জীবন এতটা স্থির ছিল না তাঁর। কিছুদিন আগেই এক সাক্ষাৎকারে ব্যক্তিগত জীবনের কথা খোলামেলা ভাবে বলেছিলেন সাগ্নিক, আর সেই কথাগুলোই এখন তাঁর গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে!
অভিনেতার বক্তব্য বিকৃত করে, তাঁর জীবনের পুরনো ঘটনার সঙ্গে নতুন রঙ মিশিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে নানা রকম গুজব। কেউ বলছে, আবার নাকি বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙেছে সাগ্নিকের। কেউ বা বলছে, স্ত্রী শম্পার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে, সাগ্নিকের সঙ্গে নাকি বিবাদ চলছে তীব্র। টলিপাড়ার অলিগলিতে এমন সব রটনাই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। যদিও এই নিয়ে একেবারেই বিরক্ত সাগ্নিক। তাঁর কথায়, “আমার পদবিও তো আগেই বদলে দিয়েছেন সবাই। আমি চট্টোপাধ্যায় নই, এমনকি কোনও পদবি ব্যবহারই করি না!”
তিনি অভিযোগ করেছেন, পুরনো সাক্ষাৎকারে প্রাক্তন স্ত্রীর কথা বলেছিলেন, আর এখন সেটাই ভুলভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে শম্পার নামে। প্রসঙ্গত, অভিনেতার জীবনের অতীতের অধ্যায় খুব একটা সহজ ছিল না। প্রায় দশ বছরের বিবাহিত জীবনের পর একদিন জানতে পারেন, তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীর জীবনে এসেছে অন্য কেউ। সেই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার চেষ্টাও করেছিলেন তিনি, কিন্তু শেষ পর্যন্ত দু’জনেই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেন। তবে, সেই ভাঙনেও তাঁর জীবনের বন্ধন পুরোপুরি ছিন্ন হয়নি।
প্রথম পক্ষের দুই ছেলেমেয়ে আজও তাঁর সঙ্গেই রয়েছে। বর্তমানে অভিনেত্রী শম্পা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সংসার করছেন সাগ্নিক। তাঁদের চারজন সন্তান নিয়ে সুন্দরভাবে চলছে জীবন— দু’জন সাগ্নিকের প্রাক্তন পক্ষের সন্তান, একজন শম্পার আগের সম্পর্কের মেয়ে, আর এক ভাগ্নে ছোট থেকে তাঁদের সঙ্গেই বড় হয়েছে। এই নিয়ে তিনি বলেন, “আমার বড় মেয়ে এই খবর পড়ে বিরক্ত। আমি তো একটা সাধারণ কথা বলেছিলাম, সেটাকে মসলা মিশিয়ে ঝাল মুড়ি বানিয়ে বিক্রি করা হলো কেন?”
আরও পড়ুনঃ গু’লিতে জখম পারুল! তীর হাতে মায়ের আগমনেই বদলে গেল দৃশ্য, মৃ’ত্যুপুরী থেকে মেয়েকে টেনে আনলেন তিনি! রায়ান পাগলপ্রায়, পারুল নিখোঁজ! জঙ্গলে র’ক্তের স্রোত— ‘পরিণীতা’-য় বাড়ছে উত্তেজনা!
সবশেষে অভিনেতা জানান, এসব বিতর্ক নিয়ে তিনি আর কিছু বলতে চান না। তাঁর মতে, “এখন কেউ কথা বলে না, সবাই গল্প বানিয়ে নেয়। তাতে যদি কারোর আনন্দ হয়, তাহলে হোক। তবে, আশ্চর্য লাগে এটা জানলে যে এতদিন আমার জীবন নিয়ে মানুষের এত মাথা ব্যথা ছিল না। হঠাৎ করেই আমার সংসারের অশান্তি জানতে এত উৎসাহ!” জীবন, সম্পর্ক, ভুল বোঝাবুঝি— সবকিছুর মাঝেই নিজের কাজ আর পরিবারের প্রতি মনোযোগী থাকতে চান তিনি। ব্যক্তিগত জীবনের ঝড় পেরিয়ে সাগ্নিক যেন এখন নিজের মতো করেই খুঁজে নিচ্ছেন শান্তির পরিসর।
