ছোটপর্দায় একাধিক জনপ্রিয় ধারাবাহিকে ‘বৌদি’ চরিত্রে ‘রাজন্যা মিত্র’র (Rajanya Mitra) অভিনয় বহু দর্শকের মন ছুঁয়েছে। তাঁর চোখে-মুখে থাকা অভিব্যক্তি আর সংলাপ বলার ভঙ্গি তাঁকে আলাদা করে চিনিয়ে দেয়। কিন্তু পর্দার এই পরিণত, আত্মবিশ্বাসী অভিনেত্রীর জীবনে একসময় লুকিয়ে ছিল একদম অন্য এক কিশোরী—যার প্রথম প্রেমের গল্প ছিল একতরফা ভালোবাসার টানাপোড়েনে ভরা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে সেই কৈশোরের স্মৃতি ভাগ করে নিলেন রাজন্যা, যা অনেকেরই নিজের ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিতে পারে।
তাঁর কথায়, ক্লাস নাইনে পড়ার সময়ই জীবনে প্রথম একজন ছেলের ভালোবাসা অনুভব করেছিলেন তিনি। তবে সেই ভালোবাসা ছিল অনেকটা দূর থেকে দেখা, অনুভব করা একরকমের মুগ্ধতা। রাজন্যার পরিবারে ছিল কড়া শাসন, তাই কোনওদিনই কাছাকাছি আসার সুযোগ পাননি তিনি। সেই ছেলেটি কিন্তু থেমে থাকেনি—কখনও টিউশনের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকত, কখনও বা স্কুল শেষে রাজন্যার পিছু নিত চুপচাপ। রাজন্যা তাকে ডাকতেন ‘বাবাইদা’ বলে।
এক ধরনের মায়া ছিল তাদের সেই বন্ধনে, যদিও সেটা কখনই প্রেমের রূপ নিতে পারেনি। কিন্তু ঘটনার মোড় ঘুরে যায় তখন, যখন রাজন্যার এক বান্ধবী এসে অনুরোধ করে বসে, বাবাইদাকে যেন ছেড়ে দেয় সে। কারণ, সেই ছেলেটি ওই বান্ধবীর অঙ্কের টিউটর ছিল এবং তাদের মধ্যেও নাকি ভালোবাসার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। বন্ধুত্বের মান রাখতেই রাজন্যা চুপচাপ সরে এসেছিলেন সেই ভালোলাগার সূত্র থেকে। বাবাইদার সঙ্গে আর দেখা করা বা মুখোমুখি হওয়া বন্ধ করে দেন তিনি।
সেই বিচ্ছেদের শব্দ নেই, অথচ যার স্মৃতি এখনো বড্ড স্পষ্ট। সেই সময়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে রাজন্যা বলেন, “প্রত্যেকের জীবনেই এমন একজন বাবাইদা থাকেন।” তাঁর চোখে সেটা ছিল জীবনের এক নিষ্পাপ অভিজ্ঞতা, যা এখন শুধুই মায়াভরা স্মৃতি হয়ে আছে। ছোটবেলার সেই একতরফা প্রেম যে এখনও মনে পড়ে তাঁর, তা অকপটে স্বীকার করে নিয়েছেন অভিনেত্রী। কৈশোরের আবেগের সেই গল্প আজও তাঁকে ছুঁয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ক্যামেরার সামনে কেঁদে কেঁটে অনুভূতি আদায় করেছিলেন, প্রতারণা কান্ডে ঘাড়ে দোষ পড়তেই রণমূর্তি পূজার!
রাজন্যা মনে করেন প্রেম আর ভালোবাসা এক নয়। তাঁর কথায়, যদি কোনও সম্পর্কে সততা, বন্ধুত্ব আর গভীর বিশ্বাস থাকে, তাহলেই সেটা সত্যিকারের ভালোবাসায় পরিণত হয়। সেই হিসেবে কিশোর বয়সের সেই বাবাইদা-পর্বটিকেই তিনি নিজের জীবনের প্রথম প্রেম হিসেবে ধরে নিতে রাজি। কারণ সেখানে ছিল মুগ্ধতা, টান, আর একরাশ অনুভূতি—যা আজও হৃদয়ের এক কোণে জায়গা করে আছে।