জয়েন গ্রুপ

বাংলা সিরিয়াল

এই মুহূর্তে

থিয়েটারের মঞ্চেই ১০০ টাকার বিনিময়ে লেখা হয়েছিল জীবনের আসল নাটক! ভুল বোঝাবুঝি থেকে প্রেম, আর প্রেম থেকে কর্পোরেট বিয়ে!— বর্ষীয়ান অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায় এবং স্ত্রী ঈশিতার বিয়ের গল্পটা যেন বড়পর্দাকেও হার মানায়!

বিনোদন জগতের ঝলমলে আলোয় অনেক সময়ই ঢাকা পড়ে থাকে, শিল্পীদের জীবনের নানানা অজানা গল্প। কিন্তু সবকিছুর মধ্যেও তাঁদের প্রেম বা বিয়ের গল্প যেন সবসময়ই এক বিশেষ কৌতূহল জাগায় দর্শকের মনে! অনেকেই আছেন যাঁরা খ্যাতির আলোয় আসার আগেই সংসার পেতেছেন, অথচ তাঁদের সেই গল্প খুব কম মানুষই জানেন। অভিনেতা শুভাশিস মুখোপাধ্যায়ের (Subhasish Mukhopadhyay) ক্ষেত্রেও তেমনই এক গল্প আছে, যেটি রূপকথার মতো সুন্দর আবার বাস্তবের মতোই সরল।

তাঁর ও স্ত্রী ঈশিতার প্রেমের শুরুটা সিনেমা বা নাটকের গল্পের মতোই অচেনা পথে। তখন শুভাশিস ছিলেন থিয়েটার এবং বড়পর্দা দুই দিকেই সমান ব্যস্ত। একদিন হঠাৎ দূর থেকে দেখলেন একটি মেয়ে তার দিকেই আসছে, যার উপস্থিতি যেন তাঁর মনে দাগ কাটল মুহূর্তেই। পরে জানা গেল, মেয়েটিও অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত— অন্য একটি থিয়েটার দলের সদস্যা। শুভাশিসের এক বন্ধু তাঁকে সেই দলে নিয়ে যায় এবং মজার ছলে বলে দেয়, অভিনেতা নাকি খুবই প্রফেশনাল।

তিনি শুধু টাকা নিয়ে কাজ করায় বিশ্বাসী। বন্ধুর মুখে কথাটা শুনে শুভাশিসের মনে তখন ভয়, হয়তো সামনের মেয়েটির মনে ভুল ধারণা তৈরি হবে। কিন্তু সেই ভুল বোঝাবুঝিই পরে তাঁদের জীবনের বাঁক বদলে দিল। অভিনেতার কথায়, “পরবর্তীতে বিয়েটা কে কর্পোরেট বিয়ে বললেও ভুল হবে না!” ঈশিতা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, তার প্রথম ডিরেক্টরিয়াল কাজ পেয়েছিল একদিন, নাটকের নাম ‘ঘর’। প্রতিটা শো-এর জন্য শুভাশিস ১০০ টাকা করে নিয়েছিলেন ঈশিতার কাছ থেকে, যা তখনকার দিনে অনেকটা টাকা।

কিন্তু সেই নাটকই নাকি বাস্তবে তাদের ‘ঘর’ তৈরি করে দিয়েছিল! আজও এই কথা বলতে গিয়ে, হাস্যরস মেশানো এই মন্তব্যে ফুটে ওঠে তাঁদের সম্পর্কের সহজাত উষ্ণতা। তিনি মজা করে আরও বলেন, সবাই বলে স্বর্গে জুটি তৈরি এই, কিন্তু মার্কেটিং হয় জাহা’ন্নামে! উল্লেখ্য, বছরের পর বছর কেটে গিয়েছে, শুভাশিস-ঈশিতার সম্পর্ক আরও গভীর হয়েছে সময়ের সঙ্গে। তাঁদের দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে হাসি-ঠাট্টা, বন্ধুত্ব আর পারস্পরিক শ্রদ্ধাই রয়ে গিয়েছে মূল সুরে।

শুভাশিস বরাবরই নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে বিনোদন জগত থেকে আলাদা রেখেছেন। সেই কারণেই হয়তো তাঁদের সম্পর্ক এখনও এত নিখুঁত ও শান্তিপূর্ণ। আজও শুভাশিস সেই সহজ-সরল মানুষ, যিনি একদিন মঞ্চে ঈশিতাকে দেখে প্রেমে পড়েছিলেন, আর আজও সেই সম্পর্ককেই নিজের জীবনের শ্রেষ্ঠ কাজ বলে মনে করেন। তাঁদের প্রেমের গল্প হয়তো সিনেমার মতো নয়, কিন্তু বাস্তব জীবনে সেটাই এক পরিপূর্ণ ঘরের গল্প।

Piya Chanda

                 

You cannot copy content of this page