বাংলা সিনেমার অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং প্রতিভাবান অভিনেতা হলেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty), অন্যদিকে বাংলার একজন জনপ্রিয় অভিনেত্রী ও নৃত্যশিল্পী হলেন মমতা শঙ্কর (Mamata Shankar)। মমতা শঙ্কর এবং মিঠুন চক্রবর্তী একসময় প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ ছিলেন। তাদের পরিবারও এই সম্পর্ক মেনে নিয়েছিল এবং ২৩ জানুয়ারি বিয়ের তারিখ নির্ধারিত হয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আটকে গিয়েছিল সেই বিয়ে কিন্তু কেন?
মমতা শংকরের জীবন রাতারাতি পাল্টে দিয়েছিল একটি ছবি, যা হলো ‘মৃগয়া’। এই ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছিলেন মিঠুন-মমতা। মিঠুন চক্রবর্তী তখন সবে সবে ক্যারিয়ারে দাঁড়াতে শুরু করেছেন, এই ছবির জন্য তিনি পেয়েছিলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এই ছবি থেকে হঠাৎ করে একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। নিজের ছন্দে এগোতে থাকে তাদের সম্পর্ক। এমনকি পরিবারের উপস্থিতিতেই তাদের বিয়ের দিনও ঠিক হয়ে গিয়েছিলো।
একটি সাক্ষাৎকারে মমতা জানান, “১৭৮০-এ দু’জনেই বিয়ে করি। সেই বছর আমার আবার বাপিদার সঙ্গে বিয়ে ঠিক হল। প্রথম থেকে তো বাপিদাই ছিলেন। এত বছরের জীবনে বাপিদার সঙ্গে যখন থেকে আলাপ, তখন থেকে আমায় কেউ টলাতেই পারেনি। তারপর মৃগয়া করতে গিয়ে বাপিদার সঙ্গে আমি মিঠুনের আলাপ করিয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম। তারপর আমরা শুটে ব্যস্ত। আর তখন কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল। আমি একেবারে নিজেকে কোনওভাবে ধরে রেখেছিলাম, যে নাহ, এটা কোনওভাবে হতে পারে না। কারণ বাপিদার প্রতি আমি এতটাই প্রতিশ্রুতি বদ্ধ। এটা হতে পারে না। এমন হতে হতে কখন কোথায় যে হয়ে গেল বিষয়টা, বুঝতে পারিনি। একদিকে ভীষণ ভাল হয়েছিল এটা হওয়াতে, আমি বাপিদাকে আরও ভালভাবে চিনতে পেড়েছি। কারও সঙ্গে এটা না ঘটলে আমি বাপিদাকে এতটা ভালভালে বুঝতে পারতাম না। তখন আবার মিঠুনের পরিবারের সঙ্গে আমার ভীষণ ভাল সম্পর্ক।”
বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত জানাতে মিঠুনকে জানিয়ে ছিলেন মমতা। তাঁর কথায় – “বিয়ে ঠিক হওয়ার পর আমি মিঠুনকে সবটা বলি। সেটা এক মজার ঘটনা। এক স্টুডিও-তে দেখা। আমি মিঠুনকে বলেছিলাম– শোন তুই ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতায় আছিস? ও উত্তরে বলল– কেন? তুই বিয়ে করছিস? আমি বললাম– হম। উত্তরে ও বলল– আমিও বিয়ে করছি। আমি বললাম- তাই! কাকে? বলল– এখনও ঠিক হয়নি।”
আরও পড়ুনঃ দোকান দেখার পাশাপাশি সমানতালে চলত পড়াশোনা, এক কামরার ঘরে থেকে আজ টিআরপি সফল অভিনেত্রী! ঈশানীর জীবন সংগ্রামের গল্প চোখে জল আনবে আপনার
মিঠুন ও মমতার সম্পর্ক ভাঙার প্রশ্ন করা হলে তার উত্তরে মমতা শঙ্কর বলেন, “তখন সবে ও কেরিয়ার শুরু করেছে, স্ট্রাগেল পেড়িয়ে ও তখন সবে ছবি পেতে শুরু করেছে। তখনই ও বিয়ে করতে রাজি ছিল না। বলেছিল ২ বছর সময় লাগবে। বিয়ের তারিখটা পিছিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিল। আমার তখন ঠিক আত্মসম্মানে লাগেনি, তবে দুই বাড়ি থেকেই বিয়েটা হয়ে যাক। যখন বিয়ের দিন স্থির হয়েছিল ওর আর আমার, তখন ও সেভাবে ছহি পাচ্ছিল না। তবে বিয়ের তারিখ যখন এগিয়ে আসে, সেই সময় ওর কেরিয়ার দাঁড়াতে শুরু করে। তাই ও কিছুটা সময় নিতে চেয়েছিল। এটাতে কোথাও ভুল নেই। আমি বঝি। তবে আমার পরিবার কোনও গসিপ, সমালোচনা চাইত না। সবাই জেনে গিয়েছে, তখন একটা অদ্ভুত পরিস্থিতি। তবে যেটা হয়েছিল, সেটা ভালর জন্যে হয়েছিল বলে আমি মনে করি।”