টলিউড (Tollywood) ইন্ডাস্ট্রির ‘বোল্ড অ্যান্ড নো ফিল্টার’ অভিনেত্রীদের মধ্যে যার নাম সব সময়েই শিরোনামে থাকে, তিনি হলেন অভিনেত্রী ‘ঋতাভরী চক্রবর্তী’ (Ritabhari Chakraborty)। তাঁর অকপট স্বীকারোক্তি ঘিরে চর্চার শেষ নেই। ‘ফাটাফাটি’তে যেমন ফুল্লরা, ‘ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মটি’তে শবরী, কিংবা ‘নন্দিনী’তে স্নিগ্ধা, অভিনয়ের ক্ষেত্রেও বরাবর বেছে নিয়েছেন তিনি ব্যতিক্রমী চরিত্র। তাঁর দাবি, যদি সমাজের গোঁড়ামিকে কিছুটা হলেও ভাঙা যায় এই চরিত্রদের দিয়ে। কিন্তু বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা বলছে, ছোটবেলার ক্ষত থেকেই নাকি অভিনেত্রীর এই চিন্তা! কি আছে সেই তিক্ত শৈশব অভিজ্ঞতায়?
একজন শিশুর কাছে বাবা-মা হলেন প্রথম বন্ধু তথা আশ্রয়ের জায়গাও। আর কথাতেই আছে, কন্যা সন্তানেরা বাবাকে দেখেই নাকি ছোট থেকে পরিকল্পনা করে ফেলে ভবিষ্যতের জীবনসঙ্গীর চরিত্র কেমন হওয়া উচিত। কিন্তু অভিনেত্রী ঋতাভরীর ক্ষেত্রে এর ব্যতিক্রম। ঋতাভরীরা দুই বোন, মা ‘শতরূপা সান্যাল’ও এক সময়ে অভিনয়ের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন। আর বাবা ‘উৎপলেন্দু চক্রবর্তী’ ছিলেন একজন অভিজ্ঞ পরিচালক। মায়ের সঙ্গে বাবা বেশ কয়েকটি কাজও করেছেন, বলে জানান ঋতাভরী।

তবে ছোট বেলায় যেখানে মেয়েরা বাবার সবচেয়ে কাছের হয়, ঋতাভরী ও চিত্রাঙ্গদা ছিলেন বরাবর উপেক্ষিত। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ঋতাভরী জানান, “বাবা যেভাবে মায়ের উপর অত্যাচার করত, সেগুলো ভোলার নয়। এগুলো দেখেই শৈশব নিয়ে একটা ট্রমা তৈরি হয়েছে। আমাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার, মারধর করতেন আর একটা সময়ের পর দায়িত্ব নিতেও অস্বীকার করেন। ছোট্ট ঋতাভরী অনেককিছুর মধ্যে দিয়েই গেছে।” তিনি আরও বলেন,” বাবার সঙ্গে মা বেশ কটা কাজ করেছেন।
আমি বলবো মায়ের অভিজ্ঞতা দিয়ে, যে কাজের ক্ষেত্রে মায়ের সঙ্গে বাবার সম্পর্ক ছিল দশে দশ কিন্তু বাবা এবং স্বামী হিসেবে একদম ব্যার্থ মানুষ উনি।” প্রশ্ন করা হয়, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কি ক্ষমা করতে পেরেছেন তাঁকে?
আরও পড়ুনঃ হাসপাতালে ভর্তি রাহুল-প্রীতির কন্যা! অসুস্থ ছোট্ট আইরা, কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা প্রীতি! খুদের অসুস্থতা চিন্তায় ফেলেছে! সকলকে প্রার্থনায় অনুরোধ মা-বাবার!
উত্তরে ভারি গলায় অভিনেত্রী বলেন,”একজন মৃত মানুষকে বলে কি লাভ, সেই আমার কাছেই ফিরে আসবে কথাগুল। উনি হাজারটা বাজে কাজ করতেই পারেন, কিন্তু আমার মায়ের সঙ্গে যা করেছেন, আজকের আমিও সেটা মানতে পারি না। আজও হয়তো আমি ক্ষমা করতে পারব না তাঁকে। কিন্তু ছোট্ট ঋতাভরীর জন্য খুব খারাপ লাগে, তখন সে নিজের বড় হয়ে ওঠার স্বপ্নকে সময় দিতে পারেনি। বাজে ভাবে শারীরিক ও মানসিক অবসাদে ভুগেছে। ওই ছোট্ট ঋতাভরীকে ক্ষমা করে দিলাম আর তাঁর সঙ্গে আমিও ক্ষমা প্রার্থী ওর কাছে।”
এক কথায়, অতীতকে বাঁধা না হয়ে দিয়ে তার থেকে শিক্ষা নিয়েই তিনি নিজেকে গড়ে তুলছেন একজন সাবলীল অভিনেত্রী হিসেবে!