ত্বরিতা চট্টোপাধ্যায় (Twarita Chattopadhyay) তাকে এখন সকলেই চেনেন। সৌরভ চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী তিনি। নিজের যোগ্যতায় নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছেন। ত্বরিতা নিজের স্ট্রাগল সম্বন্ধে কথা বলতে গিয়ে বলেন, “আমার স্ট্রাগলটা শুরু হয়েছিল ছোটবেলা থেকে। আমি উত্তর কলকাতার একটা বনেদি বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেছিলাম। একান্নবর্তী পরিবারের ভালো দিক যেমন রয়েছে, অনেক রকম সমস্যা রয়েছে। আমার দাদু কামারপুকুরের তাজপুরের জমিদার। আমার দিদির পর আমি আবার মেয়ে। আমি হওয়ায় মাকে অনেক কথা শুনতে হয় পরিবারের লোকজনদের থেকে। কিন্তু আমার বাবা কখনও দুঃখ পায়নি। আমার বাবা সমাজের কখনও তোয়াক্কা করত না। আমার জন্ম বাড়িতে একটা দুঃখের মহল এনে দিয়েছিল।”
বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাবাকে হারান ত্বরিতা (Twarita Chattopadhyay)। তিনি বলেন, “যখন বড় হই, কিছুদিনের মধ্যে আমার বাবা মারা যায়। তখন থেকে আমার স্ট্রাগলটা শুরু হয়। ৯-১০ বছর বয়সে যখন বাবা মারা গেল তখন থেকে শুরু হল আসল স্ট্রাগলটা। আমাদের পরিবারের লোকজনেরা চেষ্টা করেছিল মা দিদি ও আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার। তাই আমাকে তখন তাকে ভোকাল হতে হয়। আমার মায়ের পাশে দাঁড়ানোর জন্য হতে হয়েছিল। তখন থেকেই শুরু হয় আমাকে লড়াই করে বাঁচতে হবে।”
কিভাবে প্রথম অভিনয় জগতে প্রবেশ, এ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অভিনেত্রী (Twarita Chattopadhyay) জানিয়েছেন, “১৭-১৮ বছর বয়স তখন হঠাৎ করেই একটা সুযোগ আসে মডেলিংয়ের। একটা সংবাদ মাধ্যমের পত্রিকা নন্দিনী, সেখানে অনেক মডেলদের সাথে আমার ছবি বেরোয়, পরিবারের লোকজনরা বলতে থাকে যে এর মধ্যে পড়াশোনা হবে না। হয়তো পড়তে বসেছি বাড়ির কেউ এসে বলে গেল, তুই পাস করতে পারবি তো ? খারাপ লাগতো, তবে কান দিইনি। মা মডেলিংটাকে পছন্দ করছিল না কারণ বাড়ির লোকেরা খুব বেশি অসন্তুষ্ট ছিল। একটা খুব নামী প্রডিউসারের জনপ্রিয় ধারাবাহিকে লিড রোলে কাজ পেয়েছিলাম। তখন পড়াশোনা করতে হবে বলে আমার মা আমাকে সেটা করতে দেয়নি। তারপর মাকে না জানিয়েই একটা কাজে আমি নাম দি। তারাও বলেছিল হিরোইন হতে কিন্তু আমি বলেছিলাম যে আমি হিরোইন হতে পারব না, আমাকে অন্য কোন চরিত্র দিন।”
আরও পড়ুন: এবার ঘুরবে খেলা! অবশেষে জগদ্ধাত্রীর হাতে এলো মোক্ষম প্রমাণ, বৈদেহীর ঘরেই লুকিয়ে ছিল স্বয়ম্ভুকে ফাঁসানের রহস্য!
টেলিভিশন নাকি সিনেমা কোনটাতে কাজ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন ত্বরিতা (Twarita Chattopadhyay) । অভিনেত্রীর কথায়, ” লাস্ট ইয়ার এমএসসি চলছে তখন আমি একটা ছবিতে কাজের সুযোগ পাই। একসাথে প্রায়র পাঁচটা ছবির কাজ শুরু হয় কিন্তু কোন ভাবে পাঁচটা ছবি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর আবার টেলিভিশনে কাজ শুরু করি।” আনন্দ উচ্ছ্বাস থেকে কিছুটা দূরে থাকেন অভিনেত্রী। এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, “শুটিংয়ের পর আফটার পার্টি হয় না বলে, কাজের জায়গা থেকে বাদ পড়ি। তবে হিরোইন না হওয়ার জন্য আমার কোন আফসোস নেই। এক সময় যারা আমাকে হেও করেছিল সেই পরিবারের সদস্যটাই এখন অন্যদের পরিচয় দেয় যে আমি ওদের এই হই, কেউ হই।”