চিংড়িকে কথায় আমরা জলেও পোকা বললেও মাছেদের মধ্যে চিংড়ির ফ্যান নেহাতই কম নয়, বরং ইলিশের সঙ্গে সমানে সামনে টক্কর দিয়ে চলে চিংড়ি। অনেকে চিংড়ি এতটাই পছন্দ করেন যে অ্যালার্জি থাকার শর্তেও ওষুধ খেয়েও তার মিস করেননা চিংড়ি মাছ। কখনও ভাজা, কখনও তরকারি, কখনও বড়া, কখনও মালাইকারি তো তখনও না সাধারণ রসা। ছোট হোক বা বড় চিংড়ি পাতে পড়লেন মন খুশি হয়ে যায় অনেকেরই। তাই এবার আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি একেরবারে অন্যরকম একটি চিংড়ি মাছের রেসিপি চিংড়ি মাছের মুইঠ্যা। কিন্তু চলুন তার আগেই জেনে নিই কি কি গুন আছে চিংড়ি মাছে?
প্রথমেই জানিয়ে রাখি পুষ্টিবিদের মতে চিংড়িতে রয়েছে ৪২% প্রোটিন, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ই, ১২, ক্যালসিয়াম, মিনারেলস, ফসফরাস প্রভৃতি। তবে চিংড়িতে ফ্যাটের পরিমাণ থাকে অনেক কম। মস্তিস্কের স্মৃতিশক্তি বাড়াতে, ত্বক উজ্জ্বল রাখতে, ক্ষত স্থানে চিহ্ন সারাতে চিংড়ি বেশ উপকারী। এছাড়াও ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি রোধ করতে, আয়োডিনের ঘরতি মেটাতে, হাড় মজবুত করতে, রক্ত স্বল্পতা মেটাতে এবং রক্তে হিমগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে চিংড়ি। কিন্তু মনে রাখবেন চিংড়িতে রয়েছে কোলেস্টরল, তাই কোলেস্টরলের রোগীরা চিংড়ি খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। এবার দেখা যাক কি কি উপকরণ লাগবে চিংড়ির মুইঠ্যা বানাতে।
উপকরণ:
চিংড়ি মাছ, পেঁয়াজ কুচি, আলু সেদ্ধ, আদা কুচি, ধনেপাতা কুচি, রসুনের কোয়া, লঙ্কার গুঁড়ো, রসুন বাটা, কাঁচালঙ্কা বাটা, হলুদ গুঁড়ো, সর্ষের তেল, ধনে গুঁড়ো, কাজু, লেবুর রস, টমেটো, তেজপাতা, নারকেলের দুধ, গোটা গরমমশলা, লবণ ও সামান্য চিনি।
প্রণালি:
প্রথমেই চিংড়িগুলোকে ভালো করে খোসা ছাড়িয়ে ধুয়ে নিন। এবার জল ঝরিয়ে ভালো করে বেঁটে নিন চিংড়িগুলোকে। তারপর একটি বড় পাত্রে চিংড়ি বাটার সঙ্গে ধনে পাতা কুচি, আলু সেদ্ধ, রসুন বাটা, লঙ্কার গুঁড়ো, লেবুর রস, হলুদ গুঁড়ো, কাঁচা লঙ্কা বাটা এবং সামান্য লবণ দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপর একটি পাত্রে সর্ষের তেল গরম করে পেঁয়াজ কুচি, আদা কুচি, কাজু, রসুনের কোয়া, টমেটো ভালো করে ভেজে নিন। তারপর এগুলোকে ঠান্ডা করে বেটে নিন চটপট। এরপর কড়াইয়ে তেল গরম করে গোটা গরমমশলা এবং তেজপাতা ফোড়ন দিন।
আরও পড়ুন: মুগ বা মুসুর নয়, কেবল আলু দিয়েই বানিয়ে ফেলুন সুস্বাদু ডাল, ভাতের সঙ্গে চেটেপুটে সাফ হবে পাত
এবার এই ফোড়নের মধ্যে বাটা মশলাগুলো দিয়ে ভালো করে নাড়াচাড়া করুন। একটু ভাজা হয়ে সব গুঁড়ো মশলাগুলো দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন। এরপর মশলা থেকে তেল ছাড়া শুরু করলে দিয়ে দিন এক কাপ নারকেলের দুধ ( বাটার পরিমাণ বুঝে নারকেলের দুধের দেবেন) খেয়াল রাখবেন নারকেলের দুধের সঙ্গে মশলা যেন ভালো করে মিশে যায় কারণ এটাই হবে গ্রেভি। এবার বেঁটে রাখা চিংড়ির মিশ্রণটি বড়ার মতো গোল করে ওই নারকেলের দুধ -মশলা গ্রেভিতে দিন। প্রয়োজন বুঝলে দিয়ে পারেন সামান্য জল। এরপর ঢাকা দিয়ে দিয়ে ৫-৭ মিনিট ফোটান। নারকেলের দুধের সঙ্গে বড়াগুলি ভালো করে ফুটে গেলে ওপর থেকে ছড়িয়ে দিন ধনেপাতা কুচি। তাহলেই তৈরি আপনাদের চিংড়ি মাছের মুইঠ্যা। গরম ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করুন এই দারুন চিংড়ি মাছের রেসিপি।