ছোটপর্দার দর্শকের কাছে ‘মা’ (Maa) ধারাবাহিকের ঝিলিকের মাকে ভুলে যাওয়া কঠিন। সেই চরিত্রে যিনি অবিস্মরণীয় হয়ে আছেন, তিনি অভিনেত্রী ‘মহুয়া হালদার’ (Mahua Halder)। পর্দায় তিনি মাতৃত্বের আবেগ ফুটিয়ে তুললেও, বাস্তব জীবনে মা হওয়ার সুখ অনুভব করেন আরও পরে—কন্যা আরিহার জন্মের মধ্য দিয়ে। সদ্য ছয় বছরে পা দেওয়া আরিহাই এখন মহুয়ার জীবনের কেন্দ্রবিন্দু। অভিনেত্রী জানান, “প্রথম কোলে নিয়ে বিশ্বাস হচ্ছিল না, সত্যিই ও কি আমার অংশ!”
কন্যাসন্তানের আশাই বরাবর করেছেন, আর সেই স্বপ্ন পূরণ হওয়ায় নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেন তিনি। মহুয়া স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে বলেন, আরিহা যখন মাত্র ১৬ মাসের, তখনই নতুন ধারাবাহিকের শ্যুটিং শুরু করতে হয়েছিল। একটানা ১২–১৪ ঘণ্টার কাজের ফাঁকে বুকের ভেতর কাঁটা বিঁধে থাকত, তবু দাদু-ঠাকুমা আর বাবার স্নেহে মেয়েটি দিব্যি মানিয়ে নিয়েছে। আরিহার বাবা, অভিনেতা অরিত্র দত্ত নাকি মেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব পুরোমাত্রায় সামলাচ্ছেন।
ফলে সেটে দাঁড়িয়েও মহুয়ার মনে খানিক স্বস্তি, যে মেয়ের দেখভালে কোনও ফাঁক পড়ছে না। ‘মা’ ধারাবাহিকে কাজ করার দিনগুলো আজও মহুয়াকে আবেগী করে তোলে। তিনি বললেন, “চরিত্রটিকে বিশ্বাসযোগ্য করতে মাকে পর্যবেক্ষণ করতাম। ওনার মমতা, ধৈর্য—সবটাই তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।” সেই অভিজ্ঞতা আজ বহুগুণে সমৃদ্ধ হয়েছে বাস্তব মাতৃত্বে। অভিনেত্রী মুচকি হেসে যোগ করেন, “এখন যদি ওখানে কোনও দৃশ্য করতে হতো, চোখে আর গ্লিসারিন লাগাতে হত না।”
বর্তমানে মহুয়ার বড় লক্ষ্য মেয়েকে শক্তপোক্ত মানসিকতা গড়ে তুলতে চান। “আমি চাই, আরিহা বাস্তববাদী এবং ইতিবাচক চিন্তাধারার মানুষ হোক,”—সাফ জানান অভিনেত্রী। মেয়েকে জীবনের অর্থ বোঝাতে তিনি বই পড়া, বিভিন্ন সৃজনশীল কাজ শেখানো আর নিয়মিত খেলাধুলার অভ্যাস করাচ্ছেন। ইন্ডাস্ট্রির চেনাদের ভিড় থেকে দূরে থাকলেও, মহুয়ার এই বাস্তব ‘মা’ জীবনটাই এখন তাঁর সবচেয়ে বড় চরিত্র।
আরও পড়ুনঃ টেলিপাড়ার নতুন ভিলেন! ‘নিম ফুলের মধু’-এর খলনায়িকা এবার ‘লক্ষ্মী ঝাঁপি’তে! ফের পর্দা কাঁপাতে আসছেন তনয়া! ইশার পর এবার কী রূপে?
তবু পর্দার টান কি একদম ছুটে গেছে? মহুয়া জানালেন, মন মতো গল্প আর সময় মিললে অবশ্যই ফিরবেন। “অভিনয় আমার প্রথম প্রেম,”—বললেন তিনি। তবে এই মুহূর্তে অগ্রাধিকার একটাই, আরিহার শৈশবকে যতটা সম্ভব আপন হাতে রঙিন করে তোলা। মাতৃত্ব আর ক্যামেরার ফ্রেম, দুটো ভূমিকাই যেভাবে তিনি ভাগ করে সামলাচ্ছেন, তাতে বোঝা যায় ঝিলিকের সেই ‘মা’ আজ বাস্তবেও নিজের দায়িত্ব-কর্তব্য সম্বন্ধে সমান সচেতন।
Disclaimer: এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত মতামত, মন্তব্য বা বক্তব্যসমূহ সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত অভিব্যক্তি মাত্র। এটি আমাদের পোর্টালের মতামত বা অবস্থান নয়। কারও অনুভূতিতে আঘাত করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়, এবং এতে প্রকাশিত মতামতের জন্য আমরা কোনো প্রকার দায়ভার গ্রহণ করি না।